কষ্টের ভালোবাসার গল্প
আচ্ছা বাসর রাত বলতে কি বুঝায়?
বিয়ের প্রথম রাত নাকি ফুলে ফুলে সাজানো একটি বিছানা।আমার ক্ষেত্রে কোনটা তা আমি বলতে পারব না। তবে আজ দুই বছর পর আমার বাসর রাত।কারন আমাদের বিছানাটি আজ ফুলে ফুলে সাজানো
আমার স্বামী মুরাদ বললো, সেই বিয়ের দিনের মতো শাড়ি,গহনা আরঐ সাজেই নাকি সাজতে হবে। ও সেই বিয়ের দিনটাকে আবার ফিরিয়ে আনতে চায় কারন এই দুই বছরে সে আমাকে মেনে নিতে পারে নাই।ও বলেছে এটা একটা অন্য রকম বাসর রাত।
আজ থেকে আড়াই বছর আগে আমাকে দেখতে আসল একটি পরিবার।পাত্র তার মা আর ভাবি ছোট বোন আসল আমাদের বাসায়।আমি কখনো প্রেম ভালোবাসায় জড়াইনি কারন আমি আমার বাবা মার মনে কষ্ট দিতে চাই নি,তাই ওনারা যাকে ঠিক করবে তাকেই আমি বিয়ে করবো।
কিন্তু ছেলেটিকে দেখে আমার খুব ভালো লাগল।আমি আঢ়চোখে দেখলাম একবার একটু তাকালো আমার দিকে।ছোট বোনটি জিজ্ঞেস করলো কি ভাইয়া পছন্দ হইছে।ওর ভাবী কয়েকটা প্রশ্ন করলো আমি উত্তর দিলাম।তারপর আমি ভিতরে চলে গেলাম।
শুনলাম ছেলেটার নাম মুরাদ।আমার কেমন যেন জীবনে এই প্রথম কোন ছেলেকে ভালো লাগল।একটা ব্যাপারে টেনশন হচ্ছিল যে ওরা আমাকে পছন্দ করবে কিনা।কিন্তু কয়েকদিন পর ফোন আসল ওরাও আমাকে পছন্দ করেছে পাকা কথা বলতে আমাদের যেতে বলেছে ওদের বাসায়।ওদের বাড়ী ঢাকাতে,আমাদের বাড়ী গ্রামে একটু দূরত্ব।বাবা,মামা আরো কয়েকটা মুরুব্বি গেল ওদের বাসায়।বাবা খুব খুশি ওদের বাড়ী দেখে।বাবা বললো মা তুই ওখানে সুখী হবি।
তো বিয়ে ঠিক হয়ে গেল।ছেলেরা আজকাল মেয়েদের সাথে এমনিতেই কত কথা বলে আর মুরাদ হবু বৌ এর সাথে ও কথা বলে না।আমার কত ইচ্ছে ছিল সারারাত জেগে কথা বলব বাসর রাতের প্লান করব।কিন্তু সে আমাকে একটা কল ও দেয় নি আজ অবধি।আমি ভাবলাম পছন্দ হয় নি নাকি।পরে ভাবলাম মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব কিন্তু একটা ছেলে কখনই অপছন্দ কোন মেয়েকে বিয়ে করবে না।কারন ছেলেরা তো স্বাধীন মেয়েরা অনেক সময় কিছু ভাবারও সময় না পরিবারের খাতিরে।
এগুলো ভাবতে ভাবতেই মা ফোন নিয়ে এসে বললো এই কথা বল আমি ভাবলাম ও বোধহয়,বুকের ভেতর একটা মোচড় দিয়ে উঠল এই প্রথম কথা বলবো, আমি হ্যালো বলতেই ওপার থেকে কন্ঠস্বর ভেসে আসল একটা মেয়ের।পরে বুঝতে পারলাম মুরাদের ছোট বোন।
__কী হবু ভাবী কেমন আছেন?
__জী ভালো আপনি
__আরে আপনি আমাকে আপনি করে বলছেন কেন তুমি করে বলবেন
__আচ্ছা মা ভাবী ওনারা ভালো আছে
__জী হবু ভাবী সবাই ভাল আছে শুধু একজন ছাড়া
__কে সে?
__আপনার হবু বর।আসলে ভাইয়া খুব লজ্জা পায় তাই কথা বলে না কোন মেয়ের সাথে।তাই বলে কি হবু বৌএর সাথে ও নয়।আমরা সবাই বকাঝকা করি তাও
ভাইয়া শুনে না।প্লিজ ভাবী তুমি রাগ করো না আর কদিন পরেই তো বিয়ে দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
__আচ্ছা কোন সমস্যা নেই
আসলে আমি গ্রামের সহজ সরল মেয়ে আধুনিক মেয়ের মতো স্বপ্ন আমার থাকতে পারে কিন্তু চাহিদা থাকতে নেই।আর ওদের মতো ফ্যামিলি আমাকে পছন্দ করেছে বা বিয়ে করছে এটাই অনেক বড় কিছু এখানে ছেলে আমার সাথে বিয়ের আগে কতটা ফ্রি হলো বা কতটুকু কথা বললো তা নিয়ে কারো চিন্তাও নেই
দেখতে দেখতে বিয়ের দিনটি ঘনিয়ে এল।মনটা আমার খারাপ বাবা মাকে ছেড়ে দূরে চলে যাবো তাই।তারপর ভাবলাম মেয়েদের জীবন তো এমনই পরের বাড়ি যেতে হবে।বরযাত্রী আসলো,বিয়ে পড়ানো শেষ দূরের পথ তাই তাড়াতাড়ি রওনা হতে হবে।বিদায়ের সময় বুকটা ফেটে যাচ্ছিল।
গাড়িতে ওর পাশাপাশি বসে খুব ভালো লাগছিল।কিন্তু ও একটু সরে সরে বসছিল,আমি ভাবলাম লোকজন আছে তাই হয়ত লজ্জা পাচ্ছে।রাত আটটায় গিয়ে পৌছলাম ওদের বাড়িতে।
চারতলা বিল্ডিং ওদের, তিনতলার একটি রুমে নিয়ে গেল আমাকে,এটাই হয়ত মুরাদের রুম। অনেক ফুল দিয়ে সাজানো।অনেক অনেক গোলাপ আর রজনীগন্ধা ঘ্রানে মনটা ভরে গেল।
আমাকে খেতে ডাকল ,অল্প একটু খেলাম কারন অনেক টায়ার্ড ছিলাম আরো নতুন জায়গা।
রাত এগারটা মুরাদ আসল।আমার কেমন যেন ভয় ভয় করছিল।মা বলেছিল স্বামীকে সালাম করবি।আমি উঠে সালাম করতে গেলাম ও পা সরিয়ে নিয়ে গিয়ে বললো
__এই মেয়ে এত আদিক্ষেতা দেখাবি না।আমি তোকে পছন্দ করি না মার চাপাচাপিতে এই বিয়ে আমি করেছি।আর তোর সাথে এক বিছানাও সেয়ার করতে পারব না।তুই ঐ সোফায় ঘুমাবি।
আমার মাথায় আসমান ভেঙে পরল।এমনিতে কোনদিন কথা বলেনি আমার সাথে আর আজ প্রথম কথাই তার এতো বাজে।কি স্বপ্ন ছিল এই রাতটাকে ঘিরে আর আজ কি শুনতে হলো।আমার প্রচন্ড রাগ হলো আমি গহনা গুলো খুলছিলাম আমার হাত জোড়ে চাপ দিয়ে ধরল
বললো এত রাগ আমাকে দেখাবি না।তোকে আমি কোনদিন মেনে নিতে পারব না কারন আমি একজনকে ভালবাসি।তার কথা ভুলতে পারবো না
জানিস সে কে?
আমি মনে মনে বললাম তুই কাকে ভালবাসিস না বাসিস তা জেনে আমি কি করব।কাল সকালেই চলে যাবো এখান থেকে।কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে উঠে ভাবলাম মেয়েদের বিয়ে কয়বার হয়।আর আবার বিয়ে হয়তো বাবা মা দিল ঐবিয়েতেও যদি সুখ না হয়।বাবা শুনলেও অনেক কষ্ট পাবে।থেকে যাই দেখি কি হয়
কিছুক্ষণ পর দরজায় নক
ও লাফ দিয়ে উঠল।আমি চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে রইলাম।আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলল
__এই ওঠ, কে যেন এসেছে বিছানায় এসে শুয়ে পড়
গল্পঃঅদ্ভুত বাসর
পর্ব-১
গল্পঃঅদ্ভুত বাসর
পর্ব-২
ও লাফ দিয়ে উঠল।আমি চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করে রইলাম।আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলল
__এই ওঠ, কে যেন এসেছে বিছানায় এসে শুয়ে পড়
আমাকে বিছানায় শুতে বলে ও দরজা খুলে দিল।ওর ভাবী আসছে,সে বললো কি কেমন হলো বাসর
ভাবীকে দেখে ওর মুখ একদম কালো হয়ে গেছে।কোন উত্তর দিল না।আমি বললাম ভাবী বসেন।উনি বললো না তোমরা ফ্রেশ হয়ে খেতে আসো। আমি মনে মনে ভাবলাম দেখতে কত নম্র ভদ্র অথচ ব্যবহার অনেক খারাপ দেখছি আপন বড় ভাবী তার সাথে কিভাবে তাকাল।আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেলাম।আমার শাশুড়ি বললো
__কি রে মুরাদ আজই অফিসে যাচ্ছিস কেন? কই বৌকে নিয়ে ঘুরতে টুরতে যাবি তা না আজই তোর অফিস।
__আমার জরুরি কাজ আছে মা ঘুরতে নিয়ে যাবো তবে কাল
ও অফিসে চলে গেল আমি ওর ছোট বোনের সাথে গল্প করছিলাম আমি বললাম
__তোমার ভাইয়া কি অনেক রাগী।
__ কই না তো।কিজন্য
__আমাকে কি তার পছন্দ হয়েছিল?
__হা ওর পছন্দ হয়েছে এজন্যই তো বিয়ে ঠিক হয়েছে
আচ্ছা আমি এমনি জিজ্ঞেস করলাম।সেদিন রাতে আমি সোফায় শুতে যাবো তখন ও বললো
এই ওখানে শুতে হবে না বিছানায় আয়।আমার খুব রাগ হয় তুই তুই করে কথা বললে কি মানুষ নতুন বৌকে তুই তুই করছে।যাক বিছানায় আরামে ঘুমিয়ে গেলাম।সোফায় কষ্ট হয় ঘুমাতে।
একসপ্তাহ চলে গেল আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কোন নাম গন্ধ নেই।আমি ঘর গুছাতে গিয়ে একটা ডায়রি পেলাম।ঝেড়ে নিয়ে পড়তে লাগলাম
প্রথম পেজে লিখা
"হারিয়ে ফেলা ভালোবাসা"
আমি কলেজে ওকে প্রথম দেখেছি খুব ভালো লেগে যায় যাকে বলে লাভ এন্ড ফার্স সাইট।
অনেক দিন পিছন পিছন ঘোরার পর সফল হই আমি।প্রপোজ করি নীরা রাজি হয়।চলতে থাকে আমাদের প্রণয়।ও যা চাইত আমি আমার হাত খরচেরটাকা বাঁচিয়ে ওকে দিতাম।এতে আমার কোন কষ্ট হতো না কারন আমি যে ওকে চরম ভালোবাসি। ও বলতো একটা কিছু করো আমি বলতাম পড়াশুনাটা আগে শেষ হোক ঠিকই একটা কিছু করবো
আর তারপর তোমাকে নিয়ে সুখের সংসার করবো।কতই না রঙিন স্বপ্ন দেখেছি ওকে নিয়ে।
কয়েক পৃষ্ঠা খালি,এরপর লিখা
আজ ওর জন্মদিন।আমি সময়মতো যেতে পারিনি তাই রাগ হয়ে ফুলে বসে আছে।আমি গিয়ে নিচে হাঁটু গেড়ে বসে ওর পা আমার হাঁটুর উপরে রেখে নুপূর পরিয়ে দিলাম।রাগ সব পানি হয়ে গেল।আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগল।আমি বললাম আরে কাঁদছ কেন।তোমার ভালোবাসা দেখে কবে বলেছি নুপুর আমার ভালো লাগে সেটা মনে রেখে দিছ।
কদিন পর জরুরি ভাবে নীরা দেখা করতে বললো আমি গেলাম কিন্তু ওর কথা শুনে মাথায় বাজ পড়ল।
__শোনো বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
__কি বলছ,আমাদের রিলেশনের কথা বলছিলা।
__হা বলেছি বাবা বললো ছেলে বেকার কবে কাজকর্ম করবে কে জানে।এরথেকে তুই রাজি হয়ে যাহ্।নইলে আমি তোর ব্যাপারে কিছুই জানি না।মুরাদ শোনো আমি দুঃখিত বাবার অনুমতি দোআ ছাড়া আমি সুখী হতে পারব না।প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও।আর কোন যোগাযোগ আমার সাথে করো না ,মেয়েটা কাঁদতে কাঁদতে বললো কথাগুলো।
এরপর থেকে আমি আর কোন যোগাযোগ করলাম না ওর সাথে। এদিকে বড় ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হলো সেদিকে ব্যস্ত হয়ে গেলাম গায়ে হলুদ বরযাত্রী আরো কত ভেজাল সব আমাকেই সামলাতে হবে।তো সবাইকে গাড়িতে ওঠানোর পর আমিও একটা মাইক্রোতে উঠলাম।
একি গাড়ি যে নীরাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছে, ভাবলাম অন্য কারো বিয়ে হয়তো ওরা তো ঐ বাসায় ভাড়া থাকে।আমি কোনদিন ওদের বাড়ির ভিতর যাইনি তাই কিছু জানিও না ওরা কয়তলায় থাকে।
কিন্তু সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি বৌয়ের মুখ দেখতে যাওয়ার পর
এ যে নীরা।দূরে হলেও সহ্য করা যেত।আমার ভালোবাসার মানুষটি আমার বড় ভাইয়ের সাথে রং ঢং---
এ পর্যন্ত পড়তে পড়তেই তাকিয়ে দেখি চোখ লাল করে মুরাদ দাড়িয়ে আছে আমার চুলের মুঠি ধরে অনেকগুলো চড় দিল আর বললো আমার এই ডাইরি তুই ধরার সাহস আর পড়ার সাহস কোথায় পেলি,..........................
গল্পঃঅদ্ভুত বাসর
পর্ব-৩(শেষ)
এ পর্যন্ত পড়তে পড়তেই তাকিয়ে দেখি চোখ লাল করে মুরাদ দাড়িয়ে আছে আমার চুলের মুঠি ধরে অনেকগুলো চড় দিল আর বললো আমার এই ডাইরি তুই ধরার সাহস আর পড়ার সাহস কোথায় পেলি,..
এই ছাড়ুন খুব লাগছে
এখানেই ময়লার ভিতর পড়ে ছিল তাই নিয়ে পড়ছিলাম এরজন্য আপনি এভাবে গায়ে হাত তুলবেন।
__হা কথা বললে আরো মার খাবি।
__হ্যা আরো মারেন,বিয়েই তো করেছেন মারার জন্য।এর মধ্যেই আমাকে জড়িয়ে ধরল আমি কিছু বুঝলাম না পরে খেয়াল করলাম তার ভাবী দাড়িয়ে আছে।উনি চলে যাওয়ার পর বললেন (কাব্য পেইজ
__এই ঐ মহিলা এসব যেন খুনাক্ষরেও জানতে না পারে।জানলে তোর খবর আছে।ও যেন সবসময় জানে যে আমি তোকে অনেক আদরে রাখি।
এই চল এখন ঘুরতে যাবো।
__আমি যেতে পারব না।
_কেন যেতে পারবি না
__আপনি দেখেন আমার মুখের অবস্থা কি করেছেন মেরে মেরে আর মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে।
কাল যাবো।আজ যেতে পারব না।
__আর শোন এই ডায়রি আর কখনও ধরবি না।
চলে গেল রুম থেকে।আমি কাঁদছি আর ভাবছি নিজের প্রেমিকা এখন বড় ভাবি তাই হয়ত এত রাগ আর ক্ষোভ।আমি কি করব কিছুই বুঝলাম না।আমার কপালে এটাই লিখা ছিল হয়ত দেখি ধৈর্য ধরে কখনো সুখ আসে কি!
এভাবে কখনো কখনো মার আর অল্প সল্প ভালোবাসায় কেটে গেল দুই বছর।নীরা ভাবীর একটা ছেলে হলো।ও ভাবীর সাথে কোন কথাই বলে না কিন্তু ভাতিজাকে খুবই আদর করে।
একদিন অফিস থেকে এসে দেখল আমি ওর বোনের সাথে গল্প করছি আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল।আমি ভাবলাম আমাকে আবার মারবে হয়ত।কিন্তু আল্লাহ আমার দিকে মুখ তুলে তাকাইছে।ও আমার হাত ধরে বললো
__এই শোনো আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমি তোমাকে কোন অপরাধ ছাড়াই অনেক আঘাত করেছি।কি করবো বলো নিজের ভালোবাসাকে হারিয়ে আমি উন্মাদ হয়ে গিয়েছিলাম বিয়ে করবোনা বলে ঠিক করেছিলাম কিন্তু মার জন্য করতে হলো।মা বললো আমি চিরদিন বেচেঁ থাকব না তারপর কে তোকে দেখে রাখবে তাই সাত পাচঁ ভেবে বিয়েটা করে ফেললাম।কিন্তু তোমাকে মেনে নিতে পারি নি।আজ দেখলাম একটা মেয়ে পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পরে উল্টো স্বামীকে মেরে ফেলেছে তখন আমার হুশ ফিরল যে আমার ঘরেও তো একটা নারী আছে যাকে দেড় বছর যাবৎ অত্যাচার করছি কিন্তু সে কখনো প্রতিবাদ করে নি।
__শোনেন আমরা নারীরা সব পারি।আমার জীবনে আপনি একমাত্র পুরুষ যাকে আমি প্রথম দেখায় ভালোবেসে ফেলেছি।তাই সব যন্ত্রণা সহ্য করেও এই দিনটির আশায় ছিলাম।যে একদিন আপনি আপনার ভুল বুঝতে পেরে আমার কাছে আসবেনই।
ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
__এক সপ্তাহ পর আমাদের বিবাহ বার্ষিকী ঐ দিন তুমি বিয়ের দিনের মতো সাজবে।আমাদের জীবনে হবে অন্য রকম বাসর।আর আরেকবার বলো আমাকে ক্ষমা করেছো কিনা
__আরে হা করেছি
আজ সেই আকাঙ্খিত দিন।ভাবি ওনার বাবার বাড়িতে গেছে মাও গেছে ওনার সাথে।ছোট বোন নাকি গ্রুপ স্টাডি করবে ওর বান্ধবীর সাথে।পুরো বাড়ি ফাকা।রুমটা সাজালাম ফুল দিয়ে।
ও আর আমি মিলে অনেক কিছু রান্না করলাম।ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করবো আজ দুজনে।পার্লারের একজনকে বাসায় এনে আমাকে সাজাতে বললো।আমি বললাম কি যে পাগলামি করেন আপনি।
ও বললো এই যে আপা ওকে একদম নতুন বৌয়ের মতো সাজাবেন।শুধু চুল বাধবেন না।খোলা চুলে ওকে বেশি সুন্দর লাগে।আমি বাহির থেকে আসছি।
উনি সাজিয়ে চলে গেলেন।আমি নতুন বৌ সেজে বসে আছি।এরমধ্যে একটা কন্ঠস্বর ভেসে এল
কেউ আছেন বাড়িতে
আমার বাইরে যেতে লজ্জা করছে তাও গেলাম অনেক সময় ধরে ডাকছে
দরজা খুলে দেখি মুরাদের নিথর দেহ পড়ে আছে।আমি একটা চিৎকার দিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম।
চোখ মেলে দেখি আমি বিছানায় ছোট ননদ সামনে।ও আমাকে বললো ভাবী ভাইয়া আর নেই
তোমার জন্য গিফট আনতে গিয়েছিল রাস্তা পার হওয়ার সময় এক্সিডেন্ট হয়।আমার নাম কললিস্টে থাকায় আমাকে ঐ লোকেরা ফোন দেয়।আমি সব জানতাম আজকের কথা তাই সবাইকে সরিয়ে বাড়ি ফাকা করে দিয়েছিলাম কিন্তু এ কি হলো ভাবি।
এই নাও ভাইয়ার পকেটি এই প্যাকেট ছিল।দেখ
আমি খুলে দেখলাম একটা স্বর্নের চুলের ক্লীপ আর একটা চিঠি,পড়তে শুরু করলাম
প্রিয় আমার
আমি জানি না তুমি আমাকে ক্ষমা করেছ কিনা।এই ক্লীপটা তোমার জন্য
অনেক আঘাত করেছি ঐ সুন্দর চুলে তাই আজ নিজ হাতে পড়িয়ে দিব তোমার খোলা চুলে।আর শতবার মাফ চেয়ে নিব কি পারবে আমায় ক্ষমা করতে?
ইতি
মুরাদ
আমি চিঠিটা বুকে জড়িয়ে কেঁদে কেঁদে বললাম মুরাদ এই কি ছিল তোমার অন্য রকম বাসর রাত
যে বাসর ঘরে তুমিই নেই
সমাপ্ত