গল্প: টাকা নাই, মেয়েও নাই!
সে কোনো রাজপুত্র ছিল না। না ছিল নামী পরিবার, না ছিল ব্যাংক ব্যালান্স। কিন্তু একটা জিনিস ছিল—একটা বিশাল হৃদয়। যেখানে ভালোবাসার কোনো হিসাব ছিল না, ছিল না স্বার্থ। ছোট ছোট স্বপ্ন ছিল তার। একটা চাকরি হবে, সংসার হবে, একটা মানুষ থাকবে পাশে, যে তার হাত শক্ত করে ধরে বলবে,
> “তুমি আছো তো, আমি আর কিছু চাই না।”
কিন্তু বাস্তবতা ছিল নির্মম।
যখনই কোনো সম্পর্কে এগোতে চেয়েছে, মেয়েটির পরিবার প্রথমেই জিজ্ঞেস করেছে—
> “ছেলেটা কী করে? ইনকাম কত?”
সে বলেছে,
> “আপাতত পড়াশোনা শেষ করছি, চেষ্টা করছি ভালো কিছু করার।”
ওপাশ থেকে হাসি চাপা রেখে উত্তর এসেছে,
> “ও তো এখনো কিছু করে না, আমাদের মেয়েকে কিভাবে রাখবে?”
একদিন সে একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসলো। মেয়েটি বলতো,
> “তুমি তো আমার স্বপ্নের মতো, আমি তোমাকেই চাই।”
কিন্তু সে জানতো, এই কথাগুলো যতটা মিষ্টি, তার চেয়েও বেশি নড়বড়ে।
যেদিন মেয়েটির পরিবার জানতে পারলো সে এখনো নিজের পায়ে পুরোপুরি দাঁড়ায়নি, তারা সরাসরি বললো,
> “ভালোবাসা দিয়ে সংসার চলে না, টাকা লাগে। আমাদের মেয়েকে তো দেইন্যা’র ঘরে দিতে পারি না।”
এক রাতে মেয়েটিও কেঁদে বললো,
> “আমি পারবো না... বাবা-মা’কে অবহেলা করতে পারি না।”
সে হেসে বলেছিল,
> “তুই ঠিক বলছিস। আমার দোষ, আমার কিছুই নেই। ভালোবাসা দিয়ে তো কেউ আজকাল ভাত খায় না।”
তারপর অনেকদিন কিছু বলেনি।
পরিবারও তাকে ছোট করে দেখতে শুরু করেছিল। মা প্রায়ই বলতে থাকলো,
> “তোর সমবয়সীরা কত বড় চাকরি করে, তুই এখনো কিছু করতে পারলি না?”
বাবা মুখ ফিরিয়ে থাকতো, ভাইয়েরা হাসি-ঠাট্টায় তার অক্ষমতাকে নিয়ে মজা করতো।
সে ধীরে ধীরে নীরব হয়ে গেল। কারো সামনে নিজের কষ্ট প্রকাশ করতো না। শুধু একা বসে থাকতো, ভাবতো—
> “যারা সবচেয়ে আপন, তারাই যদি আমার পাশে না থাকে, তাহলে বাইরের মানুষ কী করবে?”
কিন্তু সে থামেনি।
অন্যদের হাসি, পরিবারের অবহেলা, প্রেমিকার চলে যাওয়া—সব কিছু পাথরের মতো বুকের ভেতর চেপে রেখেও সে কাজ করেছে, চেষ্টায় লেগে থেকেছে।
একদিন, অনেক বছর পরে, সে সফল হলো। একটা বড় কোম্পানিতে চাকরি পেলো, তারপর নিজের একটা ব্যবসা দাঁড় করালো। বাড়ি হলো, গাড়ি হলো, টাকা এলো।
তখন সবাই বললো—
> “আমরা জানতাম তুই একদিন অনেক বড় হবি!”
“আমরা তোর জন্য গর্বিত।”
“তোর এখন বিয়ে করা দরকার, আমাদের আত্মীয়ের মেয়েটা খুব সুন্দর...”
সে শুধু মৃদু হেসে বললো,
> “তখনও তো আমি একাই ছিলাম, এখনও একাই থাকবো। আমি জানি, তোমাদের ভালোবাসা আমার টাকার ওজন মেপে আসে।”
তার প্রেমিকার খোঁজ সে আর করেনি। তবে শুনেছে, মেয়েটির স্বামীর সংসারে সুখ নেই। কারণ টাকা আছে, কিন্তু ভালোবাসা নেই।
সে আজ একা, কিন্তু ভেঙে পড়েনি। কারণ এখন সে জানে—
> এই সমাজে পুরুষের কদর তখনই হয়, যখন তার পকেটে টাকা থাকে। ভালোবাসা, চরিত্র, মানবিকতা—এসব শুধু কথার ফুলঝুরি। বাস্তবে শুধু টাকাটাই সত্যি।
---
এই সমাজে যারা বলে,
> “ভালো মানুষ হলে হবে”
তারা পরে বলে,
“ভালো মানুষ হলেও যদি টাকাটা না থাকে, তাহলে লাভ কী?”
একটা ছেলেকে তার মেধা, চেষ্টা, ভালোবাসা দিয়ে নয়—তাকে তার ইনকাম দিয়ে বিচার করা হয়।
কেউ বোঝে না—
ছেলেটিও কাঁদে, সে-ও ভালোবাসে, কিন্তু সমাজ তাকে শুধু ‘রোজগারের মেশিন’ ভাবে।
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com