গল্প: স্বামীকে অবহেলার শাস্তি | একটি অবহেলা কষ্টের গল্প (নারীর শিক্ষা)

 গল্প: স্বামীকে অবহেলার শাস্তি

গল্প: স্বামীকে অবহেলার শাস্তি

স্বামীকে অবহেলা ও কষ্টের গল্প

ঘরের এক কোণে চুপচাপ বসে ছিল রোহান।

বিয়ের তিনটি বছর পার হয়ে গেল, কিন্তু তার জীবনে সুখ নামক শব্দটির কোনো চিহ্ন নেই।

তার স্ত্রী, আয়শা, শুরু থেকেই তাকে উপেক্ষা করে এসেছে।


প্রথমদিকে সে ভেবেছিল, "সময় লাগবে মানিয়ে নিতে..."

কিন্তু দিন পেরিয়ে মাস, মাস পেরিয়ে বছর গেল—কিছুই বদলালো না।


রাত হলে আয়শা মুখ ফিরিয়ে শুয়ে থাকত,

রোহান যতই এগিয়ে যেত, আয়শা ততই দূরে সরে যেত।


“তুমি এসব নিয়ে এত মাথা ঘামাও কেন?”

আয়শা প্রায়ই বলত, “তোমার এসব শারীরিক চাহিদা আমাকে বিরক্ত করে।”


রোহান অপমান গিলত।

নিজেকে দোষ দিত, হয়তো তার মধ্যেই কোনো ঘাটতি আছে।

কিন্তু সে আয়শার প্রতি সব দায়িত্ব পালন করত নিঃশব্দে।


একদিন হঠাৎ করেই আয়শা ব্যাগ গুছিয়ে বলে,

“আমি বাবার বাড়ি যাচ্ছি। এই সংসারে আমি থাকতে পারবো না।”


রোহান তাকিয়ে থাকে স্তব্ধ হয়ে,

কিছু বলতেও পারে না, থামাতেও না।


আয়শা যখন বাবার বাড়ি গিয়ে পৌঁছায়, তখন তার মনটা হালকা মনে হয়।

“এবার নিজে মতো বাঁচবো,” মনে মনে বলে সে।


কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই সব বদলে যায়।


মা তাকে দেখে বিরক্ত হয়ে বলে,

“তুই কি আবার সংসার ভেঙে ফিরে এসেছিস?”


বাবা বলে,

“রোহান এত ভালো ছেলে, তোর মতো মেয়ে ওকে বুঝলো না!”


ভাইবোনের চোখে ঘৃণা,

পাড়ার মেয়েরা তুচ্ছ করে,

আত্মীয়রা ফোন ধরাও বন্ধ করে দেয়।


তিন মাস পেরিয়ে যায়।

আয়শা একদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে—

একটা ফাঁকা মুখ, একা একটা শরীর।


তার মনে পড়ে যায় সেই নিঃশব্দ রোহানের মুখ।

যে মানুষটা তাকে ভালোবেসেছিল অচিন্তনীয়ভাবে, অথচ সেও একফোঁটা স্নেহ পায়নি।

সে বুঝে যায়,

"আমার পৃথিবীর একমাত্র আপন মানুষটি ছিল রোহান।"


সেই সন্ধ্যায়, আয়শা রোহানের দরজায় এসে দাঁড়ায়।


রোহান দরজা খুলে চমকে যায়।


আয়শা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে। চোখে পানি, ঠোঁটে কম্পন।


সে হঠাৎ রোহানের পায়ে পড়ে গিয়ে বলে,

“রোহান... প্লিজ... আমাকে ক্ষমা করো... আমি ভুল করেছি... আমি বুঝিনি তুমি কী ছিলে আমার জন্য। সবাই আজ আমাকে তুচ্ছ করছে, আমি কোথাও ঠাঁই পাচ্ছি না। তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই...”


রোহান এক ধাক্কায় নিজেকে সরিয়ে নেয়।

তার গলায় রাগ, অপমান, আর একরাশ জমে থাকা যন্ত্রণা।


“তুমি আমার স্ত্রী নও,” রোহান ধীরে ধীরে বলে,

“তুমি এমন একজন নারী, যাকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়াটাই একজন পুরুষের অভিশাপ।

তুমি আমাকে তিন বছর একটা যন্ত্রের মতো রেখে দিয়েছিলে।

না ভালোবাসা, না সম্মান, না সঙ্গ।

তোমার অহংকার ভেঙেছে, এখন ফিরেছো?

তুমি কি জানো কতোটা একা ছিলাম আমি?”


আয়শা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে।

“আমি জানি রোহান, আমি খারাপ ছিলাম...

কিন্তু আমি বদলে গেছি।

আমি তোমার পায়ে পড়ে কসম করছি,

এবার যদি তুমি আমায় ফেরাও, আমি একটা চুলের মতো ভুলও করবো না...

আমার জীবন থেকে যদি তুমি সরে যাও, আমার আর কেউ থাকবে না...”


রোহান স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিকে।

তার চোখে পানি, কিন্তু মুখে কঠিনতা।


হঠাৎ সে আয়শার চোখে চোখ রাখে।

চোখে যে অনুশোচনা, যে ভাঙা আত্মসমর্পণ—তাতে তার হৃদয়ের কঠিন দেয়াল একটু একটু করে গলে যায়।


সে এগিয়ে গিয়ে আয়শাকে তুলে নেয় বুকে।


“আমি ঘৃণা করি তোমার অবহেলাকে,

কিন্তু ভালোবাসি তোমার এই পরিবর্তনটাকে।”


আয়শা কাঁদতে কাঁদতে তার বুকে মুখ গুঁজে রাখে।

সে এখন জানে—

এই মানুষটাই তার নিরাপত্তা, তার পৃথিবী।


রোহান আস্তে করে বলে,

“তবে এবার থেকে আমাকে ভালোবাসবে?”


আয়শা কাঁদতে কাঁদতে মাথা নাড়ে,

“তুমি আমার সব, রোহান... আমি আর কখনো তোমায় হারাতে চাই না।”


আর সেই মুহূর্তে

একটা হৃদয় ভাঙা সম্পর্ক আবার জোড়া লাগে—

অনুশোচনার অশ্রু দিয়ে, ক্ষমার হাত ধরে।

---

শেষ লাইন:

একজন স্ত্রী যদি নিজের স্বামীকে অবহেলা করে, একদিন সে অবহেলিত হয় এই সমাজে, পরিবারে, নিজের অস্তিত্বেও। কিন্তু ভালোবাসা কখনো শেষ হয় না, যদি অনুশোচনায় থাকে সত্যতা আর ক্ষমা থাকে ভালোবাসায়।

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com