গল্প: ভালোবাসার ব্যবসা
সে মেয়েটি চোখে স্বপ্নের মতো, মুখে মধুর হাসি, গলায় কোমল কণ্ঠ—যেকোনো ছেলের চোখে স্বপ্নময়ী, মন ভুলানো। তার ফেসবুকের ফ্রেন্ড লিস্টে হাজার হাজার ছেলে, ইনবক্সে শত শত প্রেম নিবেদন। সে কাউকে সরাসরি না বলে, আবার কাউকে না বলেও ছাড়ে না। একেকজনকে একেক পরিচয়—কখনো "আমার ফিউচার", কখনো "তুমি ছাড়া ভাবতেই পারি না"।
ছেলেগুলো ভাবে,
> “আমি হয়তো তার স্পেশাল কেউ।”
কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।
সে প্রেম করে একসাথে ৭-৮ জনের সাথে, কেউ বিদেশে, কেউ ঢাকায়, কেউ আবার তার গ্রামের পাশের শহরে। তার কাছে প্রেম মানে—উপহার, রিচার্জ, বিকাশ, ট্যুর, ভালো-মন্দ খাওয়া, কিংবা সময় কাটানোর সুবিধা।
প্রথমজন
বিদেশে থাকে। তাকে বলা—
> “তোমার মতো মানুষই আমার স্বপ্নের রাজপুত্র। তুমি টাকা পাঠাও, আমি সংসারের মতো আগলে রাখি তোমাকে।”
সে টাকা পাঠায় প্রতি মাসে, কখনো ২০ হাজার, কখনো ৫০ হাজার। মেয়েটি ফেসবুকে তার নাম ‘Husband ❤️’ লিখে রাখে শুধু তার জন্য।
দ্বিতীয়জন
ঢাকার ধনী পরিবারের ছেলে। তাকে বলা—
> “তোমার কারণেই আমার এই শহরে বাঁচা, তুমি ছাড়া একটা দিনও চলে না।”
ছেলেটি তার জন্য নিয়মিত গিফট পাঠায়—আইফোন, ব্র্যান্ডেড ব্যাগ, কসমেটিকস।
তৃতীয়জন
একজন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে মেয়েটির প্রেমে এতটাই অন্ধ যে নিজের খরচের টাকাও মেয়ের পেছনে খরচ করে। মেয়েটি বলে—
> “তুমি আমার সবচেয়ে আপন, বিয়ের পর আমাদের ঘর হবে তোমার মতো সাদামাটা।”
চতুর্থজন
সে গ্রামের ছেলে। দিনমজুর বাবার কষ্টের টাকা থেকে কিছু কিছু মেয়েটির জন্য পাঠায়। মেয়েটি বলেছে—
> “তুমি না বুঝলে আর কে বুঝবে? ভালোবাসলে কষ্ট করতেও হয়।”
পঞ্চম থেকে অষ্টম
এরা কেউ কেউ অফিসে পরিচিত, কেউ ফেসবুক ফলোয়ার। তারা হয়তো অল্পদিনের পরিচিত, কিন্তু মেয়েটি এত স্মার্টভাবে কথা বলে যে ১-২ দিনের মধ্যে প্রেমে ফেলে দেয়।
> “তুমি অনেক ভদ্র, অন্যদের মতো না।”
এই লাইনটাই সে সবাইকে বলে, শুধু নামটা বদলায়।
প্রতিদিন মেয়েটি হিসাব করে কার কাছ থেকে কত পাওয়া যাবে। কারটা দরকার "অস্থায়ী", কারটা "দীর্ঘস্থায়ী"। এমনকি তার একটা ‘রিমাইন্ডার নোট’ আছে মোবাইলে—
> “আজ ওকে বলা যে মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার।”
“ওকে বলা, পড়াশোনার ফি জমা দিতে হবে।”
“ওকে বলা, জন্মদিনে কেউ দেয়নি উপহার, মন খারাপ।”
একদিন ধরা পড়ে যায়
এক ছেলেটি, বিদেশ ফেরত, হঠাৎ দেশে এসে মেয়েটিকে সারপ্রাইজ দিতে যায়। দরজায় পৌঁছতেই আরেক ছেলেকে বের হতে দেখে। বিষয়টা খোলাসা হয় না, কারণ মেয়েটির মুখে কাঁদো কাঁদো অভিনয়—
> “ও আমার ভাই, তুমি বিশ্বাস করো নূ!”
কিন্তু কপাল খারাপ—দুদিন পর সেই ভাই আরেকটি রেস্টুরেন্টে তাকে ‘প্রেমিকা’ বলেই পরিচয় দেয় অন্য বন্ধুদের কাছে।
ধীরে ধীরে একে একে সব ছেলেরা বোঝে তারা একা না, আরও ৮-১০ জন আছে একই প্রেমের নাটকে।
শেষে?
তাদের কেউ কেউ ডিপ্রেশনে যায়, কেউ আবার জীবনের শিক্ষা নেয়।
কেউ কেউ মরে যায় অভিমানে, কেউ আবার হাসে নিজের বোকামিতে।
আর মেয়েটি?
সে এখনো ইনস্টাগ্রামে ছবি দেয়—
> “Love yourself first ❤️”
আর নতুন নতুন ছেলেদের ইনবক্সে লেখা থাকে,
“তুমি আমার মিস্টার পারফেক্ট।”
---
গভীর শিক্ষা:
এ গল্প সবার জন্য না। কিছু মেয়ের জন্য, যারা ভালোবাসাকে ব্যবসা বানিয়েছে।
তাদের কাছে প্রেম মানে সুযোগ,
বিশ্বাস মানে টোপ,
আর ভালোবাসা মানে শুধু ব্যবহার।
প্রেমে যদি একপাশে শুধু দান থাকে, আরেক পাশে শুধু নেয়া—
তবে সেটা প্রেম না, সেটা একধরনের ধোঁকাবাজি।
এখানে পুরুষরা বোকা, কারণ তারা “ভালোবাসা” বিশ্বাস করতে চায়।
আর বারোভাতারি নারীরা জানে—
পুরুষরা যখন ভালোবাসে, তখন চোখ বন্ধ করে দেয়। আর তখনই শুরু হয় নাটক।
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com