গল্প: “শেষ পরিচয় – শুধুই শরীর”
তানিশা।
নামটা একসময় ছিল আলোচিত, প্রশংসিত, হিংসিত।
যেখানে যেত, সবাই তাকিয়ে থাকত।
ক্লাসের টিচারও চুপ করে যেত তার চালচলনের দাপটে,
শহরের ছেলে-মেয়েরা বলত—"তানিশা একটা ব্র্যান্ড"।
তার স্বপ্ন ছিল আলাদা—
নিজের মতো বাঁচা, নিজের শরীর নিজের ইচ্ছায় দেখানো,
কারও নিয়মে নয়, নিজের স্বাধীনতায় জীবন গড়া।
সে বলত—
> “আমি যেভাবে খুশি পোশাক পরবো,
যাকে খুশি সময় দিব,
আমি কারও প্রপার্টি না!”
প্রথমে এই কথাগুলো শুনে অনেকে বাহবা দিত,
তাকে নারী স্বাধীনতার আইকন মনে করত,
কিন্তু ধীরে ধীরে সে নিজেরই বানানো ফাঁদে জড়িয়ে পড়ল।
মা বলেছিল:
> “তুমি যা করছ, তা আজ না হোক কাল তোমাকেই খেতে হবে।”
বাবা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল,
কারণ বন্ধুদের সামনে মেয়ের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল।
ভাই বলত না কিছু, কেবল চোখ মাটির দিকে রেখে হাঁটত।
প্রথমে একটা ছেলেকে ভালোবেসেছিল তানিশা,
সে বলেছিল—"তোমার স্বাধীনতা ভালোবাসি",
কিন্তু যখন সে অন্য ছেলেদের সাথে তার ছবি দেখল,
বলল—“তোমার শরীর সবার, তাই মনেও কেউ থাকবে না।”
তানিশা ভাবল,
> “ভালোবাসা ক্ষণস্থায়ী, নিজের দেহই সবকিছু!”
তারপর একের পর এক সম্পর্ক, রাতের সঙ্গ, পার্টি, অ্যালকোহল,
নতুন লোক, নতুন ছোঁয়া—কিন্তু মনের শূন্যতা অটুট রইল।
বন্ধুরা একসময় চলে গেল,
কারণ কেউ "মডেল গার্ল" এর সঙ্গে নিজেদের নাম জড়াতে চাইল না।
ছেলেরা চেয়েছিল শুধু সময়, শরীর, রাত—
কিন্তু কেউ চায়নি তাকে ঘরের মানুষ বানাতে।
একদিন সময় থমকে দাঁড়াল।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখল—
চোখের নিচে কালি, চামড়া ঢিলে, সৌন্দর্য ফিকে,
কিন্তু ভিতরের কষ্ট?—তা আগের থেকেও ঘনীভূত।
সে ভাবল,
> “যারা একসময় বলত আমি হট, সুন্দরী, স্পেশাল—
তারা আজ কোথায়? কে আছে আমার পাশে?”
একটা একটা করে ফ্রেন্ডলিস্ট খালি হয়ে গিয়েছিল,
ইনবক্সে শুধু পুরানো স্মৃতির গন্ধ।
একদিন হসপিটালের বেডে,
তানিশা শুয়ে ছিল একা, নিঃসঙ্গ।
ডাক্তার বলেছিল—"ইমিউন সিস্টেম ভেঙে পড়েছে, মানসিকভাবে ক্লান্ত"।
শেষ দিন তার চোখে পানি ছিল না,
শুধু ঠোঁট নড়ছিল, বলছিল—
> “ভুল করেছি… শরীর দিয়ে সমাজ জয় হয় না,
বরং সমাজ শরীর দিয়ে খেলে, তারপর ফেলে দেয়!”
---
শেষ শিক্ষা:
> একজন নারীর আসল সৌন্দর্য তার সম্মানে, তার নিজস্বতা ও আত্মমর্যাদায়।
স্বাধীনতা মানে উলঙ্গতা নয়,
নিজের সীমারেখা নিজেই গড়ে নেওয়া।
শরীর একদিন পুরানো হয়, কিন্তু চরিত্র—তা চিরকাল দীপ্তিমান।
আর যদি শরীর দিয়েই পরিচয় তৈরি করো,
তাহলে একদিন তা মুছে যায়, আর মানুষও তোমার নাম মনে রাখে না।
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com