বউকে লেখা পড়া করানোর পর: সে অন্য পুরুষের সাথে পরকিয়ায় জরিয়ে যায়

 গল্প ১: “শিক্ষার দামে আমি নিজেকে হারালাম”

শিক্ষার দামে আমি নিজেকে হারালাম

আমার নাম তাহসিন।

একজন স্কুলশিক্ষক, সাদামাটা জীবন।

বিয়ের পরে নুসরাতের চোখে এক স্বপ্ন দেখেছিলাম—যে স্বপ্নে ও শুধু আমার সঙ্গী নয়, ও-ও একদিন নিজের পায়ে দাঁড়াবে।

আমি তখন ভাবিনি, সেই স্বপ্ন একদিন আমাকে একা ফেলে যাবে।

নুসরাতকে আমি বলেছিলাম,

“তুমি আবার পড়ালেখা শুরু করো। আমি আছি তোমার পাশে।”

প্রথমে সে হাসতে হাসতে বলেছিল,

“তুমি পাগল নাকি! আমি তোমার সংসার সামলাতে চাই, পড়াশোনা না।”

আমি জোর করিনি। ধীরে ধীরে ও বুঝতে লাগলো—নিজেকে তৈরি না করলে মানুষ হয়েও অপূর্ণ থেকে যায়।

আমি ওকে ভর্তি করিয়ে দিলাম প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে।

নিজে দুটো কোচিং করতে লাগলাম, বোনের গয়নাও বন্ধক রেখেছিলাম ওর টিউশন ফি দেওয়ার জন্য।

চার বছরে নুসরাত অনেক বদলে গেল।

সে শুধু একজন শিক্ষিতা মেয়ে নয়, হয়ে উঠলো অনেক আত্মবিশ্বাসী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী।

কিন্তু এই আত্মবিশ্বাস একসময় আমাদের মাঝখানে দেয়াল তুলে দিল।

ওর ফোনে, মেসেঞ্জারে রাত জেগে কথোপকথন চলতো এক সিনিয়রের সঙ্গে—রাহাত নামের।

আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম,

“এই সম্পর্কটা কেমন?”

সে বলেছিল, “বন্ধু ছাড়া কিছু না।”

কিন্তু বন্ধুরা কখনও রাত ২টার সময় “ভালোবাসি” লেখে না।

এরপর একদিন সে বলে,

“আমি আর সংসারে আটকে থাকতে চাই না। আমি স্বাধীনভাবে জীবন গড়তে চাই।”

আমি কিছু বলিনি।

আমি তাকে স্বাধীনতা দিয়েছিলাম, পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করেছিলাম।

সে সেই পায়ে হেঁটে আমাকে পেছনে ফেলে চলে গেল।

তিন বছর কেটে গেল।

আমি ধীরে ধীরে নিজেকে গুছিয়ে নিলাম।

নিজের ছোট কোচিং সেন্টার করলাম। মা-বাবার মুখে হাসি ফিরল।

হঠাৎ একদিন দরজায় টোকা।

দরজা খুলে দেখি—নুসরাত দাঁড়িয়ে আছে। একেবারে ভেঙে গেছে। চোখে দৃষ্টি নেই।

বলল, “রাহাত আমাকে বিয়ে করেছিল ঠিকই, কিন্তু সে আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিল। সন্দেহ, অত্যাচার, মানসিক নির্যাতনে আজ আমি শূন্য।”

আমি অনেকক্ষণ চুপ থেকে বলেছিলাম,

“তুমি মানুষ হয়েছো আমার হাতে, কিন্তু মনুষ্যত্ব শেখোনি।

আমি এখন আর কোনো শিক্ষক নই, আমি শুধুই একজন ক্লান্ত মানুষ।

তোমার জন্য দরজা একদিন খোলা ছিল, কিন্তু তুমি নিজেই সেটি বন্ধ করে দিয়েছিলে।”

নীচু গলায় ও বলেছিল, “ক্ষমা চাও না... শুধু একটু আশ্রয় চেয়েছিলাম।”

আমি উত্তর দিলাম,

“আশ্রয় তখনই দেওয়া যায়, যখন কেউ হারিয়ে ফিরে আসে।

তুমি আমাকে ফেলে নতুন ঠিকানা খুঁজেছিলে, আর আমি শিখেছি—নিজেকে কখনো হারাতে নেই।”

---

গল্প ২: “যে মেয়েটিকে আমি আকাশ করে তুলেছিলাম”

আমার নাম ফারহান।

একজন সফটওয়্যার ডেভেলপার, ঘরকুনো স্বভাব।

বিয়েটা হয়েছিল পারিবারিকভাবে। মেয়েটির নাম ছিল আনিসা। শান্ত, লাজুক, স্বপ্নহীন একটা মেয়ে।

আমি চাইতাম, ও শুধু আমার স্ত্রীর পরিচয়ে না, নিজে নিজেও এক পরিচয় গড়ে তুলুক।

আমি ওকে আইটি কোর্সে ভর্তি করালাম।

নিজ হাতে কম্পিউটার চালানো শিখালাম, কোডিং বোঝালাম।

ওর আগ্রহ বাড়তে থাকলো। প্রথম প্রথম আমাকে “স্যার” ডেকে মজা করতো।

আমি ওর সেই মজার মাঝেই নিজের সব দিয়ে যাচ্ছিলাম—ভালোবাসা, সময়, শক্তি।

কিন্তু একসময় ওর রাতগুলো হয়ে গেলো চ্যাটিং-এ ব্যস্ত।

ও বলতো, “প্রজেক্ট জমা দিতে হচ্ছে, কোর্সের বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করছি।”

আমি বিশ্বাস করতাম।

একদিন হঠাৎ আমার এক কলিগ ওর ফেসবুক স্টোরিতে দেখল তার একটা ছবি—একজন ছেলের সাথে, কফিশপে হাতে হাত রেখে বসে আছে।

আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম,

“এই সম্পর্ক কেমন?”

সে বলেছিল, “তুমি বোঝ না, তুমি তো শুধু বাসা-অফিস জানো। আমি একটু মুক্তি চেয়েছিলাম।”

একদিন সে নিজেই বলে,

“আমার জীবন আমি নিজের মতো চাই। আমি চলে যাচ্ছি। তুমি আমাকে বোঝ না।”

চলে গেলো এক নতুন মানুষটার সাথে—যে নাকি “ওকে বুঝে।”

দুই বছর পরে সে ফোন করলো।

ভাঙা গলায় বলল,

“সে আজ আমার ছায়াও সইতে পারে না। চাকরি গেছে, ঘরে মারধর করে। আমি মরে যাচ্ছি।”

আমি শুনছিলাম—ভেঙে যাওয়া সেই স্বপ্নের কান্না।

আমি বলেছিলাম,

“তোমাকে আকাশ দেখাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি ডানা ভেঙে আমাকেই পুড়িয়ে দিলে। এখন আমি তোমাকে চাই না, কারণ আমি নিজেকে আবার গড়েছি।

তুমি যা হারালে, তা আর ফিরে পাবে না।”