কেল্টু বল্টু ও সেই যে ভুতুড়ে কেকের গল্প
একটা ছোট গ্রামে কেল্টু বল্টু থাকতো। কেল্টু বল্টু মানেই—যে লোকের মাথার চুল নাকি রোদে পুড়লে লাল, আর ছেলের হাসি শুনলে দাঁতগুলো নিজে নিজে নাচতে শুরু করে। গ্রামের সবাই তাকে ভালোবাসতো, কারণ সে একেবারেই অদ্ভুত, কিন্তু সবসময় হাসির কারণ বের করে আনতো।
একদিন কেল্টু বল্টু ঠিক করলো, গ্রামের প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে—“গ্রামের সবচেয়ে বড় হাসির প্রতিযোগিতা”। কিন্তু সমস্যা হলো, কেল্টুর কোনো জোকস বই নেই, কোনো কমেডি দেখেনি, আর তার স্মৃতিশক্তি এমন—যেখানে সে হাসি পায়, সেইটাই পরে ভুলে যায়।
তবুও সে সাহসী। সে গ্রামের বাজারে গেল। বাজারে ঢুকতেই চোখে পড়ল—একটা ভুতুড়ে কেকের দোকান। কেকগুলো এত বড়, এত রঙিন, যেন সূর্য আর রামধনুর মিশ্রণ। কেল্টু বল্টু ভুতুড়ে কেকের দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলো,
“এই কেকগুলো কি আমাকে হাসাতে পারবে?”
দোকানদার হেসে বলল,
“এই কেকগুলো একবার খেলে, তুমি এমন হাসবে যে, তোমার হাসি নিজেই নিজের কানে কথা বলবে!”
কেল্টু বল্টু অবাক হয়ে বলল,
“ঠিক আছে, আমি চেষ্টা করব।”
সে এক কেক কিনলো—এটা দেখতে ছিল গোলাপি, সবুজ এবং হলুদ রঙের, আর ওপরে ছিল চকলেটের চোখের মতো গোলাপ। কেল্টু এক কামড় নিলেই হঠাৎ! কেকের চোখগুলো হাসতে হাসতে জ্বলে উঠল, আর কেল্টুর দাঁতগুলো নাচতে শুরু করল।
কেল্টু বল্টু নিজেই অবাক! সে হাঁ-হা করে হাসতে লাগলো, এত হাসলো যে গ্রামজুড়ে ডাক শোনা গেল,
“কেল্টু বল্টু হাসছে, দৌড়াও!”
সবাই দৌড়ে এলো। কেল্টু বল্টুর হাসি এত শক্তিশালী যে, গ্রামের চুড়ান্ত ভয়ঙ্কর বিড়ালও হাসতে হাসতে ছাদ থেকে পড়ে গেল। পুকুরের মাছগুলোও হাসতে হাসতে হুপস করে পানি ছিটিয়ে দিল।
পরদিন প্রতিযোগিতা শুরু হলো। কেল্টু বল্টু কেকটা দেখালেই সবাই কেঁপে উঠল—হাসির জোরে। judges (সত্যি বলতে, গ্রামিরা) এমন হেসে ফেলল যে তাদের চুল পর্যন্ত নাচতে শুরু করল। অবশেষে কেল্টু বল্টু জিতে গেল। পুরস্কার—এক জিনিস: সারাজীবন হাসির জন্য অম্লান জেলি বেল্ট।
কিন্তু গ্রামে তখন কেল্টুর নতুন সমস্যা—
যখনই সে হাসতো, কেকের চোখগুলো জ্বলে উঠতো আর হঠাৎ সব কিছু কেল্টুর চোখে নাচতে শুরু করতো। সে হেসে হেসে এতটাই বিভ্রান্ত হলো যে তার নিজস্ব পায়ের পোঁদও হাতের সাথে হাত মিলিয়ে নাচতে লাগল। গ্রামের সবাই ভাবল, “ওহ, এটা তো কেল্টু বল্টুর নতুন নাচের স্টাইল!”
সবাই মিলে হেসে হেসে কেল্টুর সঙ্গে নাচলো, আর গ্রাম হয়ে গেল হাসির শহর। কেল্টু বল্টু শেষ পর্যন্ত বুঝল,
“যে হাসি একবার ছড়ায়, সেটা শুধু আমাকে নয়, সবাইকে নাচাতে পারে!”
শেষে সে কেক খেয়ে কেবল জেতেনি, বরং হাসির কিংবদন্তি হয়ে গেল। আর কেল্টু বল্টুর সেই ভুতুড়ে কেকের গল্প এখনো গ্রামের ছোটদের জন্য রাতের গল্প—যেখানে সবাই হাসতে হাসতে ঘুমোয়।