যোগ্যরা পিছনে, অযোগ্যরা সামনে
একটা ছোট্ট শহরে ছিল এক যুবক— নাম তার সজল।
মেধা, পরিশ্রম আর সততায় সে ছিল সবার সেরা।
শিক্ষক থেকে শুরু করে এলাকার মানুষ সবাই বলতো, “এই ছেলে একদিন বড় কিছু হবে।”
কিন্তু হায়!
যে সমাজে সে বড় হচ্ছিলো, সেখানে চেয়ারের উপর বসেছিলো কিছু অযোগ্য মানুষ।
তাদের কোনো জ্ঞান নেই, কোনো ভিশন নেই, শুধু দাপট আর ক্ষমতার দম্ভ আছে।
তাদের কাছে মূল যোগ্যতা হলো— তোষামোদ করা, মিথ্যা বলা, আর টেবিলের নিচে ঘুষ চালান করা।
সজলের যন্ত্রণা
সজল একটা সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিলো।
প্রশ্নে তার উত্তর ছিল নিখুঁত, সাক্ষাৎকারেও সবার মন জয় করলো।
কিন্তু রেজাল্ট বের হতেই দেখা গেল— পাশ করলো সেই লোকগুলো, যাদের উত্তর লিখতেই পারেনি।
কেন?
কারণ তাদের পিছনে ছিল “চেয়ার দখল করা অযোগ্য ছাগলেরা।”
সজল যখন ফলাফলের কাগজ হাতে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলো, তখন তার বাবার কথা মনে পড়লো—
“বাবা, তুই মেধাবী, তোর যোগ্যতার দাম একদিন সমাজ দেবে।”
কিন্তু সে বুঝলো— সমাজে যোগ্যতা মানেই হয়তো শুধু কাগজে লেখা একটা শব্দ।
সমাজের চিত্র
একবার সে দেখলো, গ্রামের রাস্তা মেরামতের টাকা এসেছে।
অযোগ্য চেয়ারম্যান আর তার দোসররা অর্ধেক টাকা পকেটে ভরে ফেললো, রাস্তা রইলো ভাঙাচোরা।
জনগণ কিছু বললো না, কারণ ভয় ছিল তাদের দাপটে।
সজল ভাবলো— “যদি যোগ্য একজন লোক চেয়ারে বসতো, আজ এই রাস্তা সবার কাজে লাগতো।
কিন্তু অযোগ্যদের দাপটে সমাজ ধ্বংস হচ্ছে।”
তিক্ত বাস্তবতা
যেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক হবে রাজনীতিবিদদের আত্মীয়,
যেখানে হাসপাতালের দায়িত্বে থাকবে ঘুষখোর,
যেখানে গ্রামের প্রধান হবে গায়ের জোরে মানুষ পেটানো লোক—
সেখানে যোগ্য মানুষগুলো চুপচাপ বইয়ের পাতায় আটকে থাকে, আর অযোগ্যরা চেয়ার দখল করে মানুষের ঘাড়ে চড়ে বসে।
শিক্ষা
👉 অযোগ্য লোকের হাতে যখন ক্ষমতা যায়, তখন সেই সমাজ ধ্বংস হয়।
👉 যোগ্যরা যদি একজোট না হয়, তাহলে তাদের যোগ্যতা কাগজে চাপা পড়ে থাকবে।
👉 চেয়ার মানে দায়িত্ব, কিন্তু দুর্ভাগ্য হলো— আমাদের সমাজে চেয়ারকে অনেকে দেখে শুধু টাকা বানানোর যন্ত্র হিসেবে।
সজল আজও লড়ছে।
সে জানে, হাজারো চেয়ারে অযোগ্য ছাগল বসে থাকলেও,
একদিন যোগ্য মানুষদের শক্তিই সমাজকে পাল্টাবে।
কারণ—
অযোগ্য লোক হয়তো কিছুদিন টিকে যায়, কিন্তু যোগ্যতার আলো কোনোদিন ঢাকা যায় না।
