শেষ আলো
ব্যর্থতা থেকে সফল
চারিদিক থেকে যখন ব্যর্থতার কুয়াশা ঘিরে ধরে, তখন মানুষের মাথা কাজ করে না।
সে শুধু ভাবে—"সব শেষ"।
রাফি ঠিক এমনই এক অবস্থায় ছিল।
প্রথমে চাকরি হারালো হঠাৎ কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায়।
তারপর ব্যবসায় যা টাকা রেখেছিল, সেটাও প্রতারণায় হারিয়ে গেল।
উপরের দুই বিপদ সামলাতেই শরীরে অসুস্থতা দেখা দিলো।
বন্ধুরা দূরে সরে গেল, আত্মীয়রা ফোন ধরা বন্ধ করে দিলো।
প্রতিদিন সকালে রাফি ঘুম থেকে উঠতো, কিন্তু বিছানা ছাড়ার ইচ্ছা হতো না।
সে মনে মনে বলতো—"যেদিকেই পা বাড়াই, ওদিকেই ব্যর্থতা দাঁড়িয়ে আছে।"
রাতে ঘুম আসতো না, মাথায় শুধু ঘুরতো—"আমি তো শেষ হয়ে গেছি।"
একটা রাত বদলে দিল সব
এক রাতে হঠাৎ বাসার পাশে বসা এক বৃদ্ধ ভিক্ষুকের দিকে তার চোখ পড়লো।
বৃদ্ধ মানুষটা শীতের রাতে হেসে বললো,
"বাবা, সব হারালে শুধু একটা জিনিস হারিও না—লড়াই করার ইচ্ছা।"
রাফি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো—"আপনি এত কষ্টেও হাসছেন কেন?"
বৃদ্ধ বললো—
"কারণ আমি জানি, কালকের সূর্য আজকের মতো হবে না।"
এ কথাটা যেন তার মাথায় বজ্রপাতের মতো বাজলো।
সে বুঝলো—সে শুধু ব্যর্থ হয়নি, সে চেষ্টা করাও বন্ধ করে দিয়েছে।
ফিরে দাঁড়ানোর শুরু
পরদিন সকালেই রাফি ঠিক করলো—ছোট থেকে শুরু করবে।
সে নিজের পুরোনো ল্যাপটপে অনলাইনে ছোট কাজ শুরু করলো—ডিজাইন, কন্টেন্ট লেখা, যেটাই আসতো।
প্রথমে টাকা খুব কম, কিন্তু মনটা ধীরে ধীরে শক্ত হতে লাগলো।
এক মাস পরে তার নিজের একটা ছোট অনলাইন স্টোর হলো।
ছয় মাসে সেটা মুনাফা দিতে শুরু করলো।
বন্ধুরা আবার ফিরে এলো, আত্মীয়রাও খবর নিতে লাগলো—কিন্তু এবার সে বুঝে গেল কারা সত্যিকার নিজের মানুষ।
শিক্ষা
রাফি আজও বলে—
"যেদিকেই ব্যর্থতা আসুক, সেটা কখনোই শেষ নয়। শেষ তখনই হয়, যখন তুমি চেষ্টা করা বন্ধ করে দাও।
চারদিক অন্ধকার হলে, যেদিকে সামান্য আলো আছে—সেদিকেই হাঁটতে শুরু করো।
কারণ আলো কখনো একা আসে না, তার সাথে নতুন পথও আসে।"
