শান্তি আসলে কোন দরজায়?
একদিন তিন বন্ধু—রাকিব, শুভ আর ইমন—চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিল। হঠাৎ রাকিব বলল,
👉 “ভাই, আমি তো একা। মনে হয় শান্তি আছি। রাতে গেম খেলি, দিনে ঘুমাই, কেউ টেনশন দেয় না। কিন্তু কখনো কখনো মনে হয়—কারো সাথে গল্প করার মতো কেউ নাই। গ্রুপে মিম শেয়ার করি, কেউ রিপ্লাই দেয় না। এইটা কি শান্তি?”
শুভ হেসে উত্তর দিলো,
👉 “তুই একা বলে শান্তি ভাবিস, কিন্তু আমি রিলেশনে আছি, তাও শান্তি নাই। দিনে একশো বার রিপোর্ট দিতে হয়—‘কোথায় আছি, কাদের সাথে আছি, অনলাইনে কেন ছিলাম।’ মনে হয় পুলিশি নজরদারিতে আছি। তাও আবার যদি একদিন রেপ্লাই দিতে দেরি করি, ও বলে—‘তুই বদলে গেছিস।’ এই শান্তি ভাই?”
এবার ইমন গম্ভীর মুখে বলল,
👉 “তোরা দুইজনেই কিছুই জানিস না। আমি বিয়ে করছি, সংসার করছি। সকালে উঠে অফিস, সন্ধ্যায় বাজার, তারপর বাসায় এসে দেখি ফ্রিজে ডিম নাই, বাচ্চার দুধ শেষ। মোবাইলে মিস কল ১৫টা—সবই বউয়ের। রাতে খাওয়ার পর বলে—‘কালকে গ্যাস বিল জমা দিতে হবে।’ আমার শান্তি নাই, শুধু EMI আর দায়িত্ব।”
তিনজনই চুপ করে গেলো।
কিছুক্ষণ পর দোকানদার মামা বলল—
👉 “তোমরা শান্তির খোঁজ করতেছো, কিন্তু আসল শান্তি থাকে কোথায় জানো?
একা থাকলে স্বাধীনতা আছে, কিন্তু একাকীত্ব কষ্ট দেয়।
রিলেশনে ভালোবাসা আছে, কিন্তু সন্দেহ আর চাপও আছে।
বিবাহিত জীবনে দায়িত্ব আছে, কিন্তু সেই দায়িত্বেই আসল নিরাপত্তা আর স্থায়ী শান্তি।
শান্তি আলাদা আলাদা জায়গায় নয়, শান্তি তোমার মনের মধ্যে।
যদি মন থেকে খুশি থাকো, তবে একা হলেও শান্তি;
যদি সত্যিকারের আস্থা থাকে, তবে রিলেশনেও শান্তি;
যদি ভালোবাসা আর বোঝাপড়া থাকে, তবে বিবাহিত জীবনেই সবচেয়ে বেশি শান্তি।”
তিন বন্ধু হেসে উঠে চায়ের কাপ একসাথে ঠুকালো।
রাকিব বলল—“আমি তাহলে আপাতত একা থেকেই শান্তি খুঁজবো।”
শুভ বলল—“আমি রিলেশনে থেকে আস্থা খুঁজবো।”
ইমন হেসে বলল—“আমি তো দায়িত্ব নিয়েই শান্তি খুঁজবো।”
👉 আর দোকানদার মামা আস্তে আস্তে বিড়ি ধরিয়ে বলল—
“শান্তি কোনো দরজায় না, শান্তি থাকে সেই মাথায় যেটা দোষ কম ভাবে আর কৃতজ্ঞ বেশি হয়।”