গল্পের নাম: “চিঠি না আসা চিঠি”
ব্রেকআপ কষ্টের স্ট্যাটাস
তারা দুজন—রাহাত আর নিশাত। একসময় ছিলো একে-অপরের পৃথিবী। সকাল শুরু হতো একে অপরের মেসেজ দিয়ে, আর দিন শেষ হতো ভিডিও কলের হাসি-মাখা ভালোবাসায়।
কলেজ জীবনের শুরুতে পরিচয়, ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব আর সেখান থেকেই প্রেম। রাহাত ছিলো একটু চুপচাপ স্বভাবের, আর নিশাত ছিল একদম উল্টো—চঞ্চল, প্রাণবন্ত, হাসিখুশি।
একসাথে বই মেলায় যাওয়া, বিকেলে রেইন-কফিতে বসে চা খাওয়া, টিএসসি’র বেঞ্চে বসে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখা—সব ছিলো যেন নিখুঁত।
তারা ভাবতো, “ভালোবাসা মানেই তো চিরকাল একসাথে থাকা”।
কিন্তু সময় বদলায়, মানুষও বদলায়...
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শুরু হয় দূরত্ব। রাহাত পড়ালেখা আর ক্যারিয়ারে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, আর নিশাত—সে তার পুরনো রাহাতকে মিস করতে থাকে প্রতিদিন।
মেসেজে আর আগের মতো ভালোবাসা থাকত না, ফোনে কথা বললেও রাহাতের কণ্ঠে থাকত ক্লান্তি, বিরক্তি।
নিশাত চেষ্টা করতো—অনেক চেষ্টা। কিন্তু ভালোবাসা কি একপাক্ষিক হলে টেকে?
একদিন নিশাত সাহস করে জিজ্ঞেস করল, “তুমি আগের মতো আর ভালোবাসো না কেন?”
রাহাত শুধু বলল, “আমার হয়তো ভালোবাসা বদলে গেছে… আমি আর আগের মতো কিছু অনুভব করি না”।
চুপ করে গেল নিশাত। কান্না চেপে রাখল।
তখন কিছু বলল না, শুধু বলল, “তুমি সুখে থেকো”।
আর তারপর থেকে তারা একে অপরের জীবনের গল্পে শুধু “একটা অধ্যায়” হয়ে গেল।
বছর দুয়েক পর রাহাত একা বসে পুরনো মেসেজগুলো পড়ছিলো।
হঠাৎ একটা মেসেজে চোখ পড়ল:
"তুমি না থাকলে আমি বাঁচবো কীভাবে?"
রাহাতের চোখে পানি চলে এল।
তাকে হারিয়ে সে বুঝেছিল, ভালোবাসা কখনোই পাল্টায় না, পাল্টে যায় সময় আর ব্যস্ততা।
আর নিশাত?
সে এখন কারও জীবনে নতুন আলো।
তবে মাঝে মাঝে একা হলে হয়তো পুরনো সেই চিঠিগুলো পড়তে গিয়ে বলে—
"তুমি ফিরে আসনি, কিন্তু আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিয়েছি।"