নারীদের সংসার স্বামী ছাড়া কেউ আপন নয় | বাস্তব স্টোরি

 গল্প: মারিয়ার সেই চিতকার

মারিয়ার সেই চিতকার

মারিয়া, দেখতে ছিল খুবই সুন্দর—যেন চোখে তাকালে একটু বেশি সময় ধরে তাকিয়ে থাকতে হয়। ছোটবেলায় বাবা মারা গিয়েছিল। মা অন্যের বাসায় কাজ করে কোনোমতে মানুষ করেছে একমাত্র মেয়েকে। তার স্বপ্ন ছিল, “মেয়েটা মানুষ হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে।”

মাধ্যমিকের পর আর পড়ানো সম্ভব হয়নি। অনেক কষ্টে এক মধ্যবিত্ত ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দেন মা। ছেলেটি শহরে ছোট একটা চাকরি করে, আহামরি কিছু না, কিন্তু ভদ্র, দায়িত্ববান এবং মায়াবী। বিয়ের কিছুদিন পর মারিয়াকে শহরে নিয়ে যায়। শুরু হয় তাদের ছোট সংসার।

একদিন মারিয়া আবদার করে—

“আমি আবার কলেজে ভর্তি হতে চাই, লেখাপড়া শেষ করব।”

স্বামী কিছুটা অবাক হয়। সে জানত না এমন ইচ্ছা মারিয়ার।

সে বলল—

“এখন সংসার, খরচ, চাকরি—সব মিলিয়ে খুব চাপ, সময় থাকলে পরে ভাবব।”

কিন্তু মারিয়া জোর দেয়, আবেগে বলে—

“না হলে আমি সংসার করব না। আমার নিজের জীবন আমি গড়ব। তুমি বাধা দিও না।”

স্বামী ভালোবাসত মারিয়াকে। অনেক চিন্তা করে রাজি হয়।

বলেছিল—

“ঠিক আছে, লেখাপড়া করো। আমি চেষ্টা করব তোমার সব চাওয়া পূরণ করতে।”

মারিয়া ভর্তি হয় কলেজে। প্রথমে সব ঠিকঠাকই চলছিল।

কিন্তু শহরের কলেজ, নতুন বন্ধু, নতুন পরিবেশ...

ধীরে ধীরে সে পাল্টাতে শুরু করে। সাজগোজ, নতুন পোশাক, স্মার্ট ফোন, সেলফি, ফেসবুক লাইভ—সব কিছুতে সে ডুবে যেতে থাকে।

তাদের সংসারের খরচ বাড়ে, অথচ মারিয়া শুধু চায় আর চায়।

স্বামী চেষ্টা করে বুঝাতে, কিন্তু মারিয়া বলে—

“তুমি শুধু টাকার হিসেব করো। আমি যেন মানুষই না!”

ক্লাসের এক ছেলের সঙ্গে মারিয়ার বেশি কথা হতে থাকে।

প্রথমে সে বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

মারিয়ার জীবন একদিকে, সংসার আর স্বামী অন্যদিকে।

একদিন রাতে মারিয়া ঘরে ফেরেনি।

ভোরে ফিরলে স্বামী জিজ্ঞেস করে—

“কোথায় ছিলে তুমি?”

মারিয়া চিৎকার করে বলে—

“তোমার মতো সন্দেহবাতিক লোকের সাথে থাকা যায় না।”

স্বামী তখন বুঝে যায় কিছু একটা ভুল হচ্ছে।

কিছুদিন পরে সব প্রকাশ পায়।

সেই ছেলের কাছে মারিয়া চলে যায়।

কিন্তু ছেলেটি তখন বলে—

“তুমি তো অন্যের বউ, আর আমি কখনোই তোমার সাথে সংসার করতে পারব না।

তুমি তো শুধু এক রাতের মেয়ে ছিলে আমার কাছে।”

মারিয়া ভেঙে পড়ে। ফিরে আসে স্বামীর কাছে।

স্বামী তখন বলে—

“যে মেয়ের সম্মান নিজ হাতে সে নষ্ট করে, তাকে বাঁচানো যায় না। তুমি এখন মুক্ত, আমি তোমায় তালাক দিলাম।”

মারিয়া চিৎকার করে কাঁদে—

“আমি ভুল করেছি, আমি বুঝতে পারিনি।”

কিন্তু তখন আর কিছুই করার ছিল না।

তার মা, যে তাকে বুকের দুধ খাইয়ে বড় করেছিল, এখন মুখ ফিরিয়ে নেয়।

কোথাও ঠাঁই নেই, কেউ বিশ্বাস করে না তাকে।

কোনো ছেলেই এখন তাকে চায় না, কেউ দেখে শুধু অবজ্ঞা ও লোভের চোখে।

যে স্বাধীনতার কথা বলে সে ভেঙেছিল সংসার, সেই স্বাধীনতাই এখন তার একাকীত্ব, অপমান আর অবহেলার নাম।

মারিয়া এখন কাঁদে, চিৎকার করে—

“আমার মা ঠিকই বলেছিল—মেয়ের সম্মান তার সর্বস্ব। একবার গেলে, আর কিছুই থাকে না।”

---

গল্পের উদ্দেশ্য

এই গল্প আমাদের শেখায়—

স্বাধীনতা মানে দায়িত্ব ছাড়া জীবন নয়।

ভালোবাসা মানে বিশ্বাস ভঙ্গ নয়।

আর নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য তার চরিত্রে, সাজে না, শরীরে না।

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com