হাসতে হাসতে শেষ: চরম হাসির গল্প | হারুন কাকুর মোবাইল বিপ্লব

 গল্প: হারুন কাকুর মোবাইল বিপ্লব

হাসতে হাসতে পাগল প্রায়

হারুন কাকু – বয়স প্রায় পঞ্চান্ন, কিন্তু মনে মনে নিজেকে মনে করেন পঁচিশের তরুণ! পাড়ার সবাই তাকে চেনে “টেকনোলোজি কাকু” নামে, কারণ তিনি সদ্য স্মার্টফোন চালানো শিখেছেন। সমস্যা হলো, শিখেছেন ইউটিউব দেখে, বুঝেছেন নিজের মতো করে!

একদিন তিনি হুট করে একটা টাচস্ক্রিন স্মার্টফোন কিনলেন। দোকানদার বলল,

“কাকা, এটা ৫জি ফোন, খুব ফাস্ট চলবে।”

হারুন কাকু গম্ভীর হয়ে বললেন,

“আমি এমনিতেই ফাস্ট মানুষ। ফোনটা আমার সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবে তো?”

প্রথম বিপত্তি: গুগল মামার ভুল ব্যবহার

কাকু ফোন নিয়ে বাড়ি ফিরেই জোরে বললেন,

“ওকে গুগুল! আজকে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি দাও!”

মোবাইল কিছু বলল না। কাকু আবার বললেন,

“ওরে গুগুল, ভুনা খিচুড়ি বানাবো!”

হঠাৎ মোবাইল বলল, “Sorry, I didn’t understand.”

কাকু রেগে গিয়ে বললেন,

“তুই বুঝবি কিভাবে! তোকে ভুনা খিচুড়ি খাওয়াইছি কখন!”

দ্বিতীয় বিপত্তি: ফেসবুকে লাইভ বিপর্যয়

পরের দিন কাকু ফেসবুকে লাইভে এসে বললেন,

“বন্ধুগণ! আজ আমি শিখিয়ে দেবো কীভাবে মোবাইলে ভাইরাস দূর করা যায়। আগে একটা ডিম ভেঙে…”

সবার মাথায় হাত। কেউ লিখছে,

“কাকু, ভাইরাস মোবাইলে হয়, ডিমে না!”

কিন্তু কাকু রেসিপি চালিয়ে যাচ্ছেন, কারণ তার ধারণা – ফোনের গরম সমস্যা মানেই ভাইরাস ঢুকেছে, আর সেটা ঠান্ডা করতে ডিম ভাঙা দরকার!

তৃতীয় বিপত্তি: ভুল নম্বরে প্রেম

একদিন কাকু ভুল করে একটা নাম্বারে কল দিলেন, ভাবলেন এটা তার ছেলের অফিসের নম্বর। ওপাশ থেকে একজন তরুণী বলল,

“হ্যালো?”

কাকু বললেন,

“তুমি কি আমার ছেলের বস?”

মেয়েটি হাসতে হাসতে বলল,

“না, আমি রিংকি। আপনি কে?”

কাকু হোঁচট খেয়ে বললেন,

“ওহ, আমি হারুন। আমি নতুন নতুন মোবাইল চালাতে শিখছি। তুমি কেমন আছো?”

এরপর কয়েকদিন পাড়ায় রটে গেল,

“হারুন কাকু প্রেমে পড়েছে!”

শেষমেশ কাকুর স্ত্রী মোবাইল কেড়ে নিয়ে বললেন,

“তোমার প্রেম যদি চার্জে চলে, আমি এখনই চার্জার গুম করে দিচ্ছি!”

পরের দিন হারুন কাকু সবাইকে বললেন,

“আজ থেকে আমি আবার বাটন ফোনে ফিরছি। এই স্মার্টফোন আমার মতো স্মার্ট লোকের জন্য না।”

পাড়ার সবাই হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি। কেউ বলল,

“স্মার্টফোন বেঁচে গেল হারুন কাকুর হাত থেকে!”

লেখা: মতিউর রহমান লিটন

গল্প: হারুন কাকুর মোবাইল বিপ্লব