গল্প: "ফিরে আসা আঘাত" |। শিক্ষা মূলক গল্প সমাজ ও বাস্তবের

 গল্প: "ফিরে আসা আঘাত"

ফিরে আসা আঘাত

রিফাত নামের এক তরুণ ছিল, যে নিজের জীবনটা দুষ্টামি, উগ্রতা আর অন্যকে ছোট করার আনন্দেই কাটাত। রাস্তায় কোনো প্রেমিক যুগল বা স্বামী-স্ত্রী একসাথে হাঁটলে সে বন্ধুদের নিয়ে ঠাট্টা করত, কটু কথা ছুঁড়ত, এমনকি মাঝে মাঝে এমন কথা বলত যা কারও বোন বা স্ত্রীর উদ্দেশে শুনলেও গায়ে কাঁটা দিত।


সে ভাবত, এসব তার সাহস, স্টাইল। সে জানত না—প্রতিটি খারাপ কথা, প্রতিটি অপমান — একদিন ঘুরে ফিরে নিজেকেই কাঁদাবে।


দিন যায়, বয়স বাড়ে। একদিন তার নিজের বিয়ে হয়। স্ত্রী সায়মা একজন শান্ত ও ভদ্র মেয়ে। রিফাত ঠিক করে, আজ সে তার স্ত্রীর হাত ধরে শহরের এক পার্কে যাবে—একটা নতুন জীবনের শুরু উদযাপন করতে।


হাত ধরে যখন রাস্তায় হাঁটছিল, তখন আচমকা তিন-চারজন ছেলে পাশ দিয়ে হাঁক ছাড়ল:


— “ও ভাই, একটু আস্তে, মানুষ এখন প্রেম করছে বুঝলা!”

— “এই ভাই, বেশি রোমান্স কইরেন না, রাস্তায় যানজট লাগে!”

— “বউটা দেখতে মন্দ না, ভাগ্য ভালো আপনার!”


রিফাত স্তব্ধ। স্ত্রীর হাত শক্ত করে ধরেই চুপচাপ হাঁটছিল, কিন্তু ভেতরে যেন আগুন জ্বলছিল। সায়মা মাথা নিচু করে চোখের পানি চেপে রাখছিল। সে কিছু বলল না, শুধু বলল,

“তোমার মতো কাউকে না হয় এইরকম কিছু বলেছিল, তাই না?”


সেই মুহূর্তে রিফাত যেন শূন্যে ঝুলে গেল। তার সমস্ত দম্ভ, মজা, দুষ্টামি সব যেন এক মুহূর্তে বুমেরাং হয়ে ফিরে এসে তার বুকে আঘাত করল।


তখনই সে বুঝলো—যে ব্যথা সে কখনো কাউকে দিয়েছিল, আজ সেই ব্যথা তার নিজের ঘরে ঢুকেছে।


সেদিন রাতে সে অনেক ভেবে চুপ করে বসেছিল।

ফেসবুক খুলে, পুরনো এক বন্ধুকে ইনবক্স করে সে লিখেছিল:


> "ভাই, আমরা একসময় অনেক বাজে কথা বলতাম রাস্তার দম্পতিদের দেখে। আজ বুঝলাম, একটাই ভুল—আরও দশজনের সম্মান কেড়ে নিয়েছিলাম। আজ সেটা আমার স্ত্রীর চোখে ফিরে এলো। আমি লজ্জিত।"


এরপর সে নিয়মিত ইসলামিক ও সামাজিক সচেতনতা বিষয়ক পোস্ট দিতে শুরু করলো। রাস্তায় কাউকে অপমান করার বদলে সে আজ মাথা নিচু করে চলে যায়, যেন কেউ না কষ্ট পায়।

---

শিক্ষা কি?:

সমাজে প্রতিটি সম্পর্ক, প্রতিটি নারী-পুরুষ একসাথে হাঁটা মানেই অশ্লীলতা নয়।

আমরা যা দিই, তা-ই ফিরে আসে—বলেন আল্লাহ। আর মানুষের সম্মানের সঙ্গে খেলা, একদিন নিজের জীবনে ফিরে এসে চোখে জল আনে।

সেই ভুল যেন আর কেউ না করে।

Disclaimer / Story Policy

This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.

We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.

If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.

"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com