🖤 একটা চুপচাপ বদলে যাওয়ার গল্প
আমি তাকে ভালোবাসতাম। সেটা বইয়ের মতো ভালোবাসা না— একেবারে সত্যি, নিজের জীবনের সবটুকু উজাড় করে দেওয়া ভালোবাসা। আমি ছিলাম সাধারণ, মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে।
সে ছিল একটু “ভালো” পরিবার থেকে। আর ওর বাবা-মা সবসময় বোঝাতে চাইতো—
> “ভালোবাসা না, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়িই আসল।”
আমি এসবের কিছুই বুঝতাম না। আমি শুধু জানতাম, তাকে ছাড়া কিছু চাই না।
আমি মা-বাবার অনুরোধ, আত্মীয়দের কথা, সমাজের হাসি-ঠাট্টা—সব উপেক্ষা করে, কেবল তার জন্য বাঁচছিলাম।
আর সে?
সে একদিন বলল,
> “আমি তোমার সাথে থাকলে আমার পরিবার আমাকে ত্যাগ করবে। আমি পারবো না।”
এর পর খুব দ্রুত… ওর বিয়ে হয়ে গেল।
যে লোকটার সাথে, সে ওর থেকে প্রায় ২০ বছরের বড়।
কিন্তু টাকা আছে, ক্ষমতা আছে, বাড়ি আছে।
আমি ভেঙে পড়লাম। রাতে কাঁদতাম, দিনে ভাবতাম — আমার দোষটা কী ছিল?
তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম...
আর না। কারও জন্য কান্না না, কারও জন্য নিজের জীবন শেষ করে দেওয়া না।
আমি বদলাতে শুরু করলাম।
প্রথমে নিজেকে বদলালাম। নিজের দক্ষতা বাড়ালাম, কঠোর পরিশ্রম করলাম।
একটা ছোট্ট ব্যবসা শুরু করলাম… তারপর এক সময় সেই ব্যবসা বড় হলো।
৭-৮ বছর লেগে গেল। এর মাঝেই পরিবার জোর করে আমাকে বিয়ে দিয়ে দেয়।
স্ত্রী খুব সাধারণ, কিন্তু শান্ত। সংসার, সন্তান — সব মিলিয়ে আমি গুছিয়ে ফেললাম।
হঠাৎ একদিন...
অনেক বছর পর সে এল।
চোখে জল। বলল,
> “আমি জানি, আমি ভুল করেছি। তুমি এখন যা হয়েছো, আমি যদি বুঝতাম…”
তার চোখে এখন আমার প্রতি ভালোবাসা নয়, হীনমন্যতা।
ওর স্বামী এখন শুধু ধনীর দাপট দেখায়, আর নতুন নতুন নারীতে মজা খোঁজে।
সে বোঝে, ভালোবাসা আর সম্মান কখনো কেনা যায় না।
আর আমি? আমি শুধু তাকিয়ে ছিলাম। কোনও কথাই বলিনি।
এখন...
তার মা-বাবা, যারা একসময় আমার গরিব পরিচয়ে লজ্জা পেত, এখন এসে বলে,
> “তুমি চাইলে আমাদের মেয়েকে এখনো বিয়ে করতে পারো। পুরুষ তো বহু বিয়ে করতে পারে…”
আমি হেসে বলি না কিছুই। শুধু নিজের মেয়ের মুখ মনে পড়ে।
ওর জন্য আজ আমি বদলেছি, ওর জন্য আমি শিখেছি—
ভালোবাসা কাউকে ছোট করে না, আর প্রতারণা কখনো ক্ষমা পায় না।
সত্যি কথা কি?
ভালোবাসা যদি সত্যি হয়, তাহলে সেটার জন্য লড়াই করতে হয়।
আর কেউ যদি সেটা না বুঝে চলে যায়, তার ফিরে আসার আর কোনও মানে হয় না।
আমি আজ সফল, শান্ত, আর আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচি।
কারণ, আমি নিজেকে ভালোবেসেছি, অন্যের ঠকানোর পরেও।