"সমাজের খাঁচা আর মুখ বন্ধ রাখার শিল্প"
সমাজ দেখতে শান্ত, কিন্তু ভেতরে লুকিয়ে আছে হিংসা, ঈর্ষা, প্রতিযোগিতা আর অদৃশ্য শৃঙ্খল।
এখানে সত্য কথা বলার জন্য কেউ তোমাকে পদক দেবে না—বরং কাঁটার মুকুট পরিয়ে দেবে।
তুমি যদি কারো ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখাও, সে তোমাকে শত্রু বানাবে, কারণ সত্যি মানুষ শুনতে চায় না, মানুষ চায় প্রশংসা, চায় নিজের ভুল ঢেকে রাখতে।
এখানে সত্য বলা মানে নিজের পায়ের নিচে আগুন জ্বালানো।
তুমি যদি দেখো কেউ অন্যায় করছে, আর তুমি মুখ খোলো—
তখন সমাজ বলে, "তুমি বেশি বুদ্ধি দেখাচ্ছো", "তুমি সমস্যা তৈরি করছো"।
কিন্তু যদি তুমি চুপ করে থেকো—তাহলে বলে, "দেখো, কত শান্ত, কত ভালো মানুষ"।
এখানে বাঁচতে হলে তোমাকে মুখ বন্ধ রাখার শিল্প শিখতে হবে।
সত্যি তোমার ভেতরে রাখতে হবে, মুখে রাখতে হবে মিষ্টি হাসি।
কারণ এই সমাজের নিয়ম খুব স্পষ্ট—
যে মুখ খোলে, তার জন্য আগে থেকেই তারা খাঁচা বানিয়ে রেখেছে।
তারা হাসি দিয়ে তোমাকে স্বাগত জানাবে, আর সুযোগ পেলে তোমার পিঠে ছুরি মারবে।
এ সমাজে মানুষ মুখে বন্ধু, ভেতরে হিসাবের খাতা।
তারা তোমার ভালো দেখে খুশি নয়, বরং ভাবে—"সে এত ভালো আছে কেন, আমি কেন না?"
তুমি যদি খারাপ অবস্থায় থাকো, তারা সান্ত্বনা দিয়ে বলে—"সব ঠিক হয়ে যাবে",
কিন্তু মনে মনে খুশি হয়—"দেখ, ওর অবস্থা আমার চেয়ে খারাপ"।
তাই এখানে বেঁচে থাকার নিয়ম:
তোমার সুখ নিজের মধ্যে রাখো।
তোমার ব্যথা নিজের বুকেই রাখো।
সত্য বলো, কিন্তু কাকে বলছো সেটা ভেবে বলো।
কারণ পৃথিবী নয়, মানুষই তোমার সবচেয়ে বড় পরীক্ষা।
আর এই পরীক্ষায় পাশ করতে হলে কখনো কখনো সত্য লুকানোই বুদ্ধিমানের কাজ।