বাবা মা বলল..বৌ টা ম-রে গিয়ে আমার ছেলেটা বেঁচেছে..ছেলের আর টাকা খরচ হবে না..
কিন্তু বাবা মা এটা বুঝল না..ঐ বৌ টা ছাড়া ছেলের বেঁচে থাকাটাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে..সে আমার সব ছিল..তাকে হা-রি-য়ে আমার পৃথিবীটা আজ সবকিছু থেকেও শূ-ন্য হয়ে গেছে..
এভাবে কেঁ-দে কেঁ-দে নিজের স্ত্রীর কথা বলছিলেন তিনি..
ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বলে..বাবার একমাত্র ছেলে হওয়াতে কোন ভাবেই এই বিয়ে মেনে নেন নি তার বাবা মা..
উপার্জনের তেমন মজবুত কোন পথ ছিল না বিধায়..ভালোবাসার মানুষটাকে নিয়ে খুব টেনেটুনে সংসার করতেন তারা..
স্ত্রীকে প্রাণাধিক ভালোবাসতেন..
একদিন স্ত্রীর অসুস্থতায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি জানতে পারলেন..তার স্ত্রীর ক্যা-ন্সা-র হয়েছে..
মাথায় যেন আকাশ ভে-ঙে পরল..এই ভ-য়ং-ক-র বজ্রপাতের মত কথাটা শুনে..
একে তো প্রাণপ্রিয় স্ত্রী..
তার উপর নেই কোন উপার্জনের বাহুল্য..
এত ভি আই পি রোগের চিকিৎসা কিভাবে করবেন তিনি..
তবে..যত ক-ষ্ট ই হোক..স্ত্রী কে চিকিৎসা করতেই হবে..
কি করবেন তিনি..
পা-গ-লে-র মত ছুটেছেন সব আত্মীয়ের কাছে..কিন্তু কেউ তাকে সাহায্য করে নি..
ডাক্তার বললেন..তার স্ত্রী খুব জোর আড়াই বছর বাঁচতে পারেন..এ কথা জেনে ছেলের বাবা মা একটা পয়সাও দেন নি..
বরং ছেলেকে বলেছেন..ম-রে-ই তো যাবে..তাহলে এত পয়সা খরচ করে দরকার কি..
নিজের বাবা মায়ের অবলীলায় বলা কথাটা বি-ষে-র ছু-ড়ি-র মত বিদ্ধ হয়েছে বুকে..
বলেছেন..আড়াইটা বছরও তো তাকে আমি কাছে পাব..এটাই আমার কাছে অনেক..
এই আড়াইটা বছর আমি তার জন্য সব পরিস্থিতিতে লড়ে যাব..তার সাথে কাটানো একটা মুহুর্তও আমার কাছে অনেক দামী..
এরপর শুরু করেন জীবনের কঠিন ল-ড়া-ই..
অনেক পরিশ্রম করে..স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে থাকেন তিনি..
স্ত্রী দূর্বল হয়ে দিনদিন হাড্ডিসার হয়ে যেতে থাকেন..
তবুও রূপ যৌবন ক্ষ-য়ে যাওয়া..আয়ু ফুরিয়ে আসা স্ত্রী কে তিনি এতটুকু অ-য-ত্ন করেন নি..
বরং পূর্বের তুললাম আরও ভালোবেসেছেন..
খুব করে চেয়েছেন..এই পৃথিবীতে শুধু সে বেঁচে থাক..তার পাশে থাক তার ভালোবাসার মানুষটি..
কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনার উপর তো কিছু করার নেই..
হায়াতের উপর মানুষের কোন অধিকার নেই..
তাই প্রিয়তমা স্ত্রী কে তিনি ধরে রাখতে পারলেন না..
তারই জন্মদিনের দিন..তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে গেল..
বহুদিন হল..স্ত্রী চলে গেছে..কিন্তু আজও হৃদয়ে তার সাথে ভালোবাসায় গেঁথে আছে সে..
এক মুহূর্তের জন্য..এক রাতের জন্যও স্ত্রী কে ভুলতে পারেন না তিনি..
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁ-দে-ন সারারাত..
তার একটাই দুঃখ..তার স্ত্রী যতদিন এ পৃথিবীতে ছিল..ততদিন সে তার নিজের বাবার বাড়ি এবং তার শ্বশুর বাড়ির অবহেলা পেয়ে গেল..শুধুমাত্র তাকে ভালোবেসে বিয়ে করার জন্য..
আজ আল্লাহর রহমতে তার অনেক অর্থ সম্পদ..কিন্তু তার সব থেকে মূল্যবান সম্পদ তার স্ত্রী আজ তার পাশে নেই..
তিনি চান..তার স্ত্রীর নামে একটা এতিমখানা তৈরি করতে..
তিনি কেঁ-দে কেঁ-দে বললেন..স্ত্রীর অসুস্থতার সময়..সেই অসহায় মুহূর্তে যাদের দ্বারে দ্বারে দৌঁড়িয়েছি..তাদের সামর্থ্য থাকা সত্বেও তারা কেউ আমাকে সাহায্য করে নি..
স্ত্রী বেশিদিন বাঁচবে না জেনেও নূন্যতম সহানুভূতি টুকুও স্ত্রী কে দেখায় নি..বরং তাচ্ছিল্য করেছে..
আজ তাদের বিপদে আমাকে লাগে..
কিন্তু আমার অর্থ আজ আর তাদের জন্য ব্যয় করতে চাই না..
আমি আমার স্ত্রীর নামেই এতিমখানা কর.. যাতে আমার স্ত্রী এই ওসীলায় পরপারে শান্তিতে থাকতে পারে..
সেখানে যেন তার আর কোন ক-ষ্ট না হয় 🙂