"একটা নাম – দুই রকম ভালোবাসা"
সত্যিকারের ভালোবাসা
রাজু আর সাব্বির—দুজনই একই এলাকায় বড় হয়েছে। একসাথে বড় হয়েছে, কিন্তু জীবন দুইদিকে গিয়েছে।
দুজনেই প্রেমে পড়েছে। একরকম নয়—দুইরকম ভালোবাসায়।
☀️ রাজু ও রিনি – সহজ-সরল ভালোবাসা
রিনি ছিল পাশের বাসার মেয়ে। চোখে চশমা, কথায় ভদ্রতা। রাজু প্রথম যখন প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল, রিনি সরাসরি বলে দেয়—
"দেখো, আমি ফ্যাশন পছন্দ করি না। আমি চাই, কেউ আমার মনটা বুঝুক।"
রাজু মোবাইলে বেশি কথা বলতো না, টাকার অভাবে রিনিকে নিয়ে ঘুরতেও যেত না। কিন্তু সে সবসময় সময় দিতো।
রিনি অসুস্থ হলে ওর জন্য নিজে রান্না করে নিয়ে যেতো। ফেসবুকে ছবি কম, বাস্তবে ভালোবাসা বেশি।
একবার রাজু চাকরি হারিয়ে ফেলে। রিনি তার পাশে বসে বলে,
“আমার জীবনের দামি উপহার তুমি, তোমার চাকরি নয়।”
দুজনেই স্বপ্ন দেখে—একদিন নিজের ঘর হবে, বারান্দায় তুলসী গাছ থাকবে, আর বিকেলে একসাথে চা খাবে।
🌪️ সাব্বির ও নীলা – স্ট্যাটাস প্রেম
নীলা দেখতে সুন্দর, ইন্সটাগ্রামে ফলোয়ার হাজার হাজার।
সাব্বির ভালোবাসায় নয়, তার সৌন্দর্যে হাবুডুবু খায়।
নীলা বলে,
“আমার প্রেমিক না হলে অন্তত একটা আইফোন প্রো মাস্ট। তবেই আমার ফ্রেন্ড সার্কেলে মান থাকবে!”
সাব্বির নিজের সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে প্রথমে আইফোন, পরে দামি হ্যান্ডব্যাগ কিনে দেয়।
প্রথমে ভেবেছিল, নীলা তাকে ভালোবাসে।
কিন্তু দেখা গেল, নীলা ইনস্টাগ্রামে একটা ছবিও দেয়নি সাব্বিরের সঙ্গে।
সাব্বির জিজ্ঞেস করলে নীলা বলে,
“তুমি তো আমার লাইফের পার্ট না, তুমি তো শুধু সাপোর্টার!”
একদিন সাব্বির হঠাৎ পকেট খালি—ব্যবসায় লস।
নীলা বলে,
“আমার সময় নষ্ট করার মতো ছেলেমেয়ে আমি না। তুমি আগে নিজে কিছু হও, তারপর প্রেম কোরো!”
🕰️ কিছু বছর পর...
আজ রাজু আর রিনি দুইটা চাকরি করে নিজেদের ছোট্ট সংসার চালায়।
ঘরে এখনও রিনির হাতে লেখা রাজুর জন্য চিরকুট:
“তোমার পাশে থাকলেই মনে হয়, আমি সবচেয়ে ধনী মানুষ।”
আর সাব্বির?
সাব্বির এখনও লোন শোধ করছে। নীলাকে ভুলে নতুন জীবন শুরু করতে চাইছে।
নীলা এখন অন্য একজন “সেটেলড” ছেলের সঙ্গে কক্সবাজারে ঘুরে বেড়ায়—ইনস্টাগ্রামে স্টোরি দেয়:
“True Love ❤️”
🎯 গল্পের শিক্ষা
👉 সত্যিকারের ভালোবাসা চকলেট দিয়ে শুরু হয় না, চেষ্টা দিয়ে টেকে।
👉 মিথ্যা ভালোবাসা স্ট্যাটাসে ভালোবাসে, বাস্তবে হিসেব কষে।
👉 কেউ কেউ ভালোবাসে পাশে বসে,
আর কেউ ভালোবাসে রেস্টুরেন্টে ছবি তুলে।
