নারীর সুখ আসলে কোথায়—এটা এক কথায় বলা মুশকিল, কারণ সুখের সংজ্ঞা সবার কাছে আলাদা। তবে বাস্তব জীবনের চিত্র যদি টেনে আনা হয়, দেখা যাবে নারীর সুখ আসলে এক জায়গায় বাঁধা থাকে না, বরং জীবনের প্রতিটি ধাপেই ভিন্নভাবে তা গড়ে ওঠে।
শুরুটা হয় বাবা-মায়ের কাছে। শৈশবে নারীর সুখ মানেই ছিল মায়ের আঁচল আর বাবার কাঁধ। মা যখন ভোরে ঘুম থেকে তুলে খাইয়ে দিত, স্কুলে যাওয়ার সময় বাবার স্নেহের হাত মাথায় বুলিয়ে দিত—এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই ছিল তখনকার রাজপ্রাসাদ। বাবা-মায়ের ভালোবাসা তখন এক অদৃশ্য দুর্গের মতো, যেখানে নিরাপত্তা, যত্ন আর ভালোবাসা সব একসাথে মিলেমিশে থাকত।
এরপর আসে পরিবার ও ভাইবোনের ভালোবাসা। শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা রাখলে সুখ খুঁজে পাওয়া যায় ভাইবোনের সাথে ঝগড়া, আবার মিলিয়ে যাওয়ার মধ্যে; আত্মীয়দের সাথে উৎসবের দিনে হাসি-আড্ডায়। এখানে সুখ আসে ভাগাভাগি করা মুহূর্ত থেকে—যেখানে কেউ একা থাকে না।
বন্ধু-বান্ধবের সাথে সুখের গল্পটা আবার অন্য রকম। এখানে সুখ মানে একসাথে বৃষ্টিতে ভিজে হাসা, রাতভর গল্প করা, মন খারাপের সময় ফোন পেয়ে হঠাৎ হেসে ফেলা। এই সম্পর্কগুলো নারীর মনকে অনেকটা মুক্ত আকাশের মতো করে দেয়, যেখানে সে নিজের মতো করে নিঃশ্বাস নিতে পারে।
জীবনের আরেক অধ্যায় আসে বিয়ের পর। স্বামীর কাছে সুখ তখন নতুন এক অনুভূতি—যেখানে ভালোবাসার পাশাপাশি থাকে দায়িত্ব, সহযাত্রা, একে অপরের প্রতি ভরসা। এখানে সুখ শুধু রোমান্সে নয়, বরং একসাথে জীবনের চড়াই-উতরাই পার করার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে।
সব মিলিয়ে, নারীর সুখ এক জায়গায় সীমাবদ্ধ নয়। ছোটবেলায় বাবা-মা, কৈশোরে পরিবার ও বন্ধু, আর প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে স্বামী—সবাই মিলে সুখের মোজাইকের টুকরোগুলো তৈরি করে। সত্যি বলতে, নারীর সুখ তখনই পূর্ণ হয়, যখন সে নিজেকে ভালোবাসতে শেখে এবং চারপাশের ভালোবাসা অনুভব করে।