কেন বউয়ের বেশি যত্ন নিলে সমাজ হিংসা করে?
১. মানুষের চোখে “ভালোবাসা” মানেই তুলনা
মানুষ আসলে নিজের জীবনের সাথে অন্যের জীবনটা মাপতে ভালোবাসে।
যখন দেখে—
> “ও ছেলে বউকে সবসময় যত্ন করছে, খাওয়ার সময় খাওয়াচ্ছে, বাজারে গেলে হাত ধরে হাঁটছে, কোথাও গেলে সাথে নিয়ে যাচ্ছে।”
তখন তাদের মনে একটা গোপন আগুন জ্বলে ওঠে।
কারণ হয়তো তারা নিজের জীবনে সেই যত্নটা পায়নি, কিংবা তার স্বামী/স্ত্রী তাকে ততটা ভালোবাসেনি।
তখন শুরু হয় মন্তব্য—
“এই ছেলে বউয়ের পাগল হয়ে গেছে।”
“বউকে মাথায় বসিয়েছে।”
“বউ ছাড়া তার কিছুই বোঝে না।”
কিন্তু ভিতরে ভিতরে আসল কারণ হলো তাদের হিংসা।
২. সমাজে আছে “পুরুষ মানেই শক্ত, নারী মানেই সহ্য করবে” মানসিকতা
আমাদের সমাজ এখনো অনেক জায়গায় ভাবে—
পুরুষকে বউয়ের যত্ন নিতে নেই, উল্টো বউয়েরই সব কিছু সহ্য করতে হবে।
তাই যখন কোনো ছেলে তার স্ত্রীকে বেশি ভালোবাসে, পাশে দাঁড়ায়, তখন সমাজের পুরনো চিন্তাধারা সেটা মানতে পারে না।
তাদের চোখে এটাই অপরাধ—
“স্বামী বউকে মানুষ হিসেবে দেখছে।”
৩. পরিবারে আসে স্বার্থ আর অবহেলার ভয়
অনেক সময় ছেলের বাবা-মা ভাবে—
“বউ আসার পর থেকে ছেলে আমাদের জন্য আগের মতো নেই।”
সে হয়তো খেয়াল করে—
আগে মা-কে বাজারে নিয়ে যেত, এখন বউকে নিয়ে যায়।
আগে বাবা-মায়ের জন্য জামা কিনত, এখন বউয়ের জন্য বেশি কিনে।
এগুলো দেখে বাবা-মায়ের ভেতরে ভয় আর কষ্ট কাজ করে,
কিন্তু সেই কষ্টটা অনেক সময় হিংসায় রূপ নেয়।
৪. বন্ধুদের ভেতরে লুকানো প্রতিযোগিতা
বন্ধুরা ভাবে—
“আমরা তো একসাথে আড্ডা মারি, আড্ডার চেয়ে বউকে বেশি সময় দিচ্ছে।”
“আগে এক ফোন দিলে চলে আসত, এখন বউকে জিজ্ঞেস না করে বের হয় না।”
ফলে বন্ধুরাও মজা করে, খোঁচা দিয়ে বলে—
“দেখে মনে হয় এখন পুরোটা বউয়ের দাস হয়ে গেছে।”
কিন্তু ভিতরে ভিতরে সেটা তাদের অভাববোধ আর হিংসা।
আসল সত্যি হলো:
মানুষ যা নিজে পায় না, সেটা অন্যকে পেলে সহ্য করতে পারে না।
নিজের জীবন যতটা খারাপ, তত বেশি অন্যের সুখ সহ্য করতে কষ্ট হয়।
আর যখন একজন ছেলে বউকে অতিরিক্ত ভালোবাসে, তখন সেটাই অনেকের চোখে অপরাধ হয়ে যায়।
কিন্তু শেষ কথা হচ্ছে:
👉 তুমি যদি তোমার স্ত্রীকে যত্ন করো, সেটা তোমার দায়িত্ব, তোমার ভালোবাসা।
👉 সমাজ কী বলল, আত্মীয়রা কী হাসল, বন্ধু কী খোঁচা দিল—সেটা তেমন গুরুত্বপূর্ণ না।
👉 কারণ একদিন সমাজ পাশে থাকবে না, কিন্তু তোমার জীবনসঙ্গীই থাকবে।
⚠️ মনে রাখো:
বউকে ভালোবাসো, যত্ন করো—কিন্তু ভারসাম্য রেখো।
যাতে পরিবার, বন্ধু, সমাজও তোমার থেকে ভালোবাসা পায়।
তাহলেই কেউ তোমাকে বউ-পাগলা বলে গালি দিতে পারবে না, বরং একদিন উদাহরণ হিসেবে মানতে বাধ্য হবে।