বাসর রাতের রোমান্টিক গল্প | বাসর ঘরে কি হয়

 বাসর রাতের গল্প

বাসর রাতের গল্প

আমি বিয়ে বাড়ির ছাদে বসে আছি। হঠাৎ করেই বাবা এসে বলতেছে....


আব্বুঃ এই তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে...

আমিঃ রেডি হয়ে নেবো মানে...কেনো...

আব্বুঃ তোর বিয়ে...রেডি হয়ে নে...

আমিঃ মানে টা কি...আমার বিয়ে! আর আমিই জানিনা...

আব্বুঃ তোর এতো জানতে হবেনা...তোকে রেডি হতে বলছি। তুই রেডি হয়ে নে...


আমি আর কিছু বলতে পারলাম না আব্বুর কথায় আমি কখনোই না করতে পারবো না,সেই সাহস আমার নেই... 


এইবার আসি আমার পরিচয়ে। আমি আকাশ অনার্স ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট। বাবা একজন ব্যবসায়ী। এসেছি বাবার বন্ধুর বিয়েতে। কিন্তু এখানে এসে দেখি ছেলে নেই, ছেলে পালিয়েছে। এরপর যা হলো। দেখতেই তো পারলেন...


এরমধ্যেই আম্মু আসলো...


আমিঃ আম্মু, আব্বু এইটা কি বলে...

আম্মুঃ দেখ বাবা, তোর আব্বুর কথার অমান্য করিস না। তুই রাজি হয়ে যা বাবা...

আমিঃ আম্মু তুমিও...

আম্মুঃ দেখ বাবা। তোর আব্বু ওদের কথা দিয়ে ফেলেছে। তোর আব্বুকে সবার চোখে ছোট করিস না...


আমি আর কিছুই বললাম না। রেডি হয়ে নিলাম। এরপর অজানা অচেনা একটা মেয়ের সাথে বিয়ে হয়ে গেলো। যাকে চোখের দেখাও দেখিনি...


বিয়ের আগে বা পরে, কখনোই তার চেহারা দেখিনি। সর্বদা ঘুমটা দিয়েই ছিলো। ওইদিকে আমারও মন নেই। আমি শুধু ভাবছিলাম, কি থেকে কি হয়ে গেলো!


যাই হোক। নতুন বউ নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। এই ৩-৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমাদের বাড়িটা ভালো করেই সাজানো হয়েচে। এটা আব্বুর জন্য বিশেষ কিছু না। যাই হোক। বাড়ি সাজানো হলেও তেমন কোনো মেহমান নেই। কারন কেউই জানেনা। কাছের কিছু আত্মীয় আছে শুধু।


আমি এইসব ঝামেলা থেকে বেরিয়ে ছাদে চলে গেলাম। ছাদে এসে সেই এক কোণায় বসে আছি। রাত প্রায় ১ টা বাজে। তখন আমার ছোট বোন সুমাইয়া আসলো....


সুমাইয়াঃ ভাইয়া, তুই এখানে কি করিস...

আমিঃ নাহ, কিছুনা। বসে আছি...

সুমাইয়াঃ নিচে চল...আব্বু তোকে ডাকতেছে...

আমিঃ তুই যা, আমি আসছি...

সুমাইয়াঃ না, তোকে নিয়ে যেতে বলেছে...

আমিঃ ঠিক আছে, চল...


এরপর নিচে চলে আসলাম...


আব্বুঃ কোথায় ছিলি...

আমিঃ এইতো ছাদে বসে ছিলাম। বলো কি বলবে...

আব্বুঃ কি বলবো মানে? তোর কি বুদ্ধি হবেনা? নতুন বউ রেখে ছাদে বসে আছিস। যাহ, ঘরে যা...

আমিঃ কিন্তু, আব্বু....

আব্বুঃ আবার কিন্তু...যেতে বলছিনা তোকে...

আমিঃ যাচ্ছি তো...


আমি আমার রুমে চলে গেলাম। রুমটা ভালো করেই সাজানো হয়েছে। মনে হবেনা, যে তাড়াহুড়া করে সাজিয়েছে। রুমে ঢুকে দেখি আমার বউ বিছানায় বসে আছে।


আমি দরজা লাগিয়ে বিছানায় গিয়ে বসলাম। বসার সাথে সাথেই..


বউ, ঘুমটা খুলে বললো, একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না....


আমিঃ সুবহানআল্লাহ....


আমার মুখ থেকে অজান্তেই বেরিয়ে গেলো।


বউ: আমি বলেছি কিন্তু, আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না...

আমিঃ কিন্তু কেনো? কি হয়েছে? বলবে তো...

বউঃ আমি আপনাকে বলতে বাধ্য নই। আমার কাছে আসার চেষ্টা করলে আপনাকে খুন করে ফেলবো। ( হাতে একটা ছুরি নিয়ে)


আমি ছুরি দেখেই লাফ দিয়ে দূরে চলে আসলাম।


আমিঃ একি, তোমার হাতে ছুরি কেনো?

বউঃ আমার কাছে আসতে চাইলে এই ছুরি আপনার পেটে ঢুকিয়ে দিবো।

আমিঃ দেখো, তুমি শান্ত হও। আমাকে বলো, কি হয়েছে...

বউঃ আবার এইদিকে আসেন... ওইদিকে যান।

আমিঃ ঠিক আছে, ঠিক আছে। আমি এইদিকে আছি। এবার ছুরি টা রেখে বলো তো, কি হয়েছে...

বউঃ সত্যিই আসবেন না তো?

আমিঃ নাহ, সত্যিই আসবো না...


বউ তখন ছুরি টা রেখে দিলো।


আমিঃ এবার বলো, কি হয়েছে? তুমি কি এই বিয়েতে রাজি ছিলেনা...

বউঃ না, আমার বাবা আমাকে জোর করে বিয়ে দিয়ে দিছে। আর যখন রাজিব পালিয়ে গেলো, তখন আমি খুব খুশি হইছিলাম। কিন্তু আপনি শেষ সময় এসে বিয়ে করে নিলেন...

আমিঃ ওহ্, এই সমস্যা? আমার আব্বু তো আমাকে এক প্রকার জোর করেই বিয়ে করাইছে। আমিও চাইনি এই বিয়ে করতে...

বউঃ সত্যি তো?

আমিঃ হ্যাঁ, সত্যি। আচ্ছা, তোমার কি এর আগে কোনো প্রেম ছিলো? যার জন্য তুমি বিয়ে করতে চাওনি।

বউঃ আরে না, আমার ওইসব প্রেম ছিলো না। কিন্তু আমার ইচ্ছে ছিলো, আমি প্রেম করেই বিয়ে করবো 

আমিঃ তাহলে সমস্যা কোথায়? প্রেম করেই বিয়ে করতে।

বউঃ আরে, আমি এখনও মনের মতো ছেলেই পাইনি। কি প্রেম করবো?

আমিঃ কেনো? কোনো ছেলে প্রপোজ করেনি নাকি?

বউঃ যারাই করেছে, জুতার বাড়ি খেয়েছে।

আমিঃ ওমা, কেনো?

বউঃ আমার পছন্দ হয় নি, তাই, তাছাড়া ওরা কেউই আসলে ভালোবাসতে আসেনি। সব আসছে, টাইম পাস করতে। তাই দিছি ইচ্ছে মতো।

আমিঃ ওরে আল্লাহ, খুব ডেঞ্জারাস তো...

বউঃ কি বললেন?

আমিঃ না না, কিছুনা। তোমার নাম কি?

বউঃ কেনো? বিয়ের সময় শুনেন নাই? কাকে বিয়ে করলেন?তার নাম ই জানেন না?

আমিঃ তখন খেয়াল ছিলো না.

বউঃ কেনো? আপনার মন কর কাছে ছিলো? আপনার কেউ আছে নাকি আবার?

আমিঃ আরে নাহ। আমার ও কেউ নেই।

বউঃ ওহ্, আচ্ছা...

আমিঃ তোমার নাম তো বললে না?

বউঃ আমার নাম সাদিয়া।

আমিঃ বাহ, সুন্দর নাম তো...

সাদিয়াঃ এখন বলেন, আমিও খুব সুন্দর।

আমিঃ মাশাআল্লাহ, তুমিও খুবই সুন্দরী।

সাদিয়াঃ হয়েছে হয়েছে। এভাবে আমাকে ইমপ্রেস করতে পারবেন না। যান, গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়েন...

আমিঃ কেনো? আমি সোফায় সুবো কেনো? তোমার সমস্যা থাকলে তুমি গিয়ে শুয়ে পরো।


সাদিয়াঃ কিহ্! আপনার কি বুদ্ধি লোপ পেয়েছে? নতুন একজন মানুষ আসছে, আর তাকে কিনা সোফায় শুইতে বলেন? যান, ওখানে গিয়ে শুয়ে পড়েন।

আমিঃ আর ওইটার কি হবে?

সাদিয়াঃ কোনটা? 

আমিঃ আজকে না বাসর রাত? তাহলে বাসর করবো না?

সাদিয়াঃ ছুরি এখানেই আছে।

আমিঃ না, না , থাক। যাচ্ছি আমি।

সাদিয়াঃ গুড। তাড়াতাড়ি যান।


আমি সোফায় এসে বসে পরলাম। এমনিতেই মন ভালো না, তার উপর বউ এর এই রূপ দেখে তো আমি পুরাই অবাক। 


সোফায় আমি শুয়ে পরলাম। রাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেংগে গেলো, কে যেনো আমার শরীল এ কিছু দিচ্ছে...


হালকা করে চোখ খুলে দেখলাম, আমার বউ। আমার শরীলে চাদর দিয়ে দিচ্ছে। শীত শীত লাগছিলো আমার, হয়তো তাই...


আমার শরীলে চাদর দেঁয়ার সময় আমি ইচ্ছে করেই হাত টা টেনে বুকে চেপে ধরলাম। সাদিয়ার নিশ্বাস আমার মুখের উপর পড়তেছে। আমি চোখ বন্ধ করেই আছি। 


সাদিয়া আমার থেকে হাত টা ছড়ানোর খুব চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। 


হঠাৎ করেই আমার হাতের মধ্যে এমন একটা চিমটি কাটল...


আমিঃ উফফফফফ... একি? তুমি? তুমি আমাকে চিমটি দিছো কেনো...


সাদিয়া: আমি আপনাকে চিমটি দিতে যাবো কেনো? হয়তো ছারপোকা কামড় দিছে।


আমি: বললেই হলো? আমার রুমে কোনো ছারপোকা নেই। আজকে অবশ্য বড়ো একটা আসছে...

সাদিয়াঃ কি বললেন? আমি ছারপোকা? এত্তো বড় সাহস আপনার?

আমিঃ জী, আমার সাহস বরাবরই একটু বেশি। এইবার একটু ঘুমাইতে দাও। 

সাদিয়াঃ এহহ, আসলে মানুষের ভালো করতে নাই। ঘুমান

আমিঃ হ্যাঁ, ঘুমাচ্ছি। যাও ! আর হ্যাঁ, একটু সাবধানে থেকো।

সাদিয়াঃ কেনো? সাবধানে থাকার কথা বলছেন কেনো?

আমিঃ না, আসলে আমার রুমের বাইরে একটা গাছ আছে । ওই গাছে একটা ভূত থাকে, মাঝে মাঝে এসে একটু জ্বালায়। এই আর কি....


সাদিয়াঃ কিহ.... ভু ভু ভূত....


আমিঃ আরে ভয় পাইয়ো না। কিচ্ছু হবেনা। যাও ঘুমাও....


দেখলাম সাদিয়া কিছু না বলেই গিয়ে শুয়ে পরলো। তবে এইটুকু বুঝতে বাকি নেই, যে, ও ভূতকে খুব ভয় পায়।


তাই ভাবলাম, একটু মজা করা যাক। আমি ফোন ফুল ভলিউমে দিয়ে ভূতের কিছু সাউন্ড প্লে করলাম।


সাউন্ড শুনে তো আমার বউ ভয়ে কাপতেছে...


হঠাৎ করেই একটা ভয়ঙ্কর সাউন্ড বেজে উঠলো মোবাইলে। অমনি সাদিয়া ওমা গো বলে চিল্লানি দিয়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো... আমার পুরো শরীলে মনে হয় কারেন্ট পাস করে গেলো.. কিছুক্ষণ পর...


আমিঃ একি...কি হয়েছে...

সাদিয়াঃ ওই যে, কেমন যেনো আওয়াজ হচ্ছিলো...

আমিঃ কোথায়... কিসের আওয়াজ...

সাদিয়াঃ আরে এখনই তো হলো, আপনি শুনেন নাই...

আমিঃ কই? আমিতো শুনলাম না? তোমার মনের ভুল হবে হয়তো। যাও ঘুমাও..

সাদিয়াঃ নাহ, আমার মনের ভুল না, আসলেই আওয়াজ হচ্ছিলো....

আমিঃ আচ্ছা দাড়াও। এই বাইরে কে আছিস? ও নতুন এসেছে, ওকে ভয় দেখাস না। ও ভয় পাচ্ছে...


সাদিয়া কে শুনিয়ে শুনিয়ে... তখন সাদিয়া ভয়পেয় আর অবাক হয়ে বললো...


সাদিয়াঃ একি? আপনি কার সাথে কথা বলছেন?

আমিঃ তখন বললাম না? তাকেই বলে দিলাম, তুমি যাও, আমি ওকে বলে দিছি, আর তোমাকে জ্বালাবে না।


দেখলাম দাড়িয়েই আছে...


আমিঃ কি হলো? দাড়িয়ে আছো কেনো?

সাদিয়াঃ না মানে, এখানে তো শীত, আপনি খাটে এসে ঘুমান।

আমিঃ নাহ, আমার দরকার নেই। তুমি যাও... আমাকে একটু ঘুমাতে দাও।

সাদিয়াঃ আমি ওখানে একা ঘুমাতে পারবো না, আমার খুব ভয় লাগছে।

আমিঃ এতে আমি কি করতে পারি?

সাদিয়াঃ আপনি খাটে ঘুমাবেন?, না হলে আপনার শরীলে আমি পানি ঢেলে দিবো।

আমিঃ যা ইচ্ছে তাই করো। যেই বিছানা থেকে আমাকে তাড়িয়ে দিছো, আমি যেখানে যাবো না।

সাদিয়াঃ দেখাচ্ছি মজা...


আমি ভাবলাম এমনি এমনি বললো। কিন্তু ওমা, ভাবতে ভাবতেই আমার শরীল পুরো ভিজে গেলো।


আমিঃ এই এই, এইটা তুমি কি করলে? পাগল নাকি তুমি?

সাদিয়াঃ আমিতো আগেই বলেছিলাম। ভালো কথা তো শুনলেন না। এখন থাকুন, এই ভেজা সোফায়।

আমিঃ ধুর.. এইটা কোনো কাজ হলো? এমনিতেই শীত শীত। 


আমার শরীল ঠক ঠক করে কাপতে লাগলো।

আমি আর কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে গেলাম, চেঞ্জ করতে।


আমি চেঞ্জ করে বেরিয়ে দেখি সাদিয়া ভয়ে ভয়ে এইদিক ওইদিক তাকাচ্ছে।


আমি মনে মনে ঠিক করে নিলাম, আমার শরীলে পানি দেওয়া? আজকে তোমার মজা দেখাচ্ছি।


আমি দরজা খুলে চলে যাচ্ছিলাম। তখন...


সাদিয়াঃ এই, কোথায় জান?

আমিঃ সোফা তো ভিজিয়ে দিলে, আমি অন্য রুমে গিয়ে ঘুমাব।

সাদিয়াঃ প্লিজ যাইয়েন না, আমি ভয়ে মরেই যাবো...

আমিঃ আমি তোমার সাথে থাকতে পারবো না, তোমার সমস্যা হবে। রাতে শুধু চিল্লাবে...

সাদিয়াঃ না না, আমার কোনো সমস্যা হবেনা। আপনি তবুও যাইয়ে ন না প্লিজ...

আমিঃ বিছানায় কোলবালিশ না থাকলে ঘুমাতে পারিনা। শেষে যদি তোমাকে ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে ধরে ফেলি, তুমি তো আমাকে মেরেই ফেলবে...

সাদিয়াঃ আপনার যা ইচ্ছে কইরেন, তবুও প্লিজ যাবেন না...

আমিঃ যা ইচ্ছে!! 


সাদিয়াঃ এই যে, উল্টা পাল্টা চিন্তা মাথায় আসলে মাথা ফাটিয়ে দিবো। যান বিছানায় একপাশে ঘুমান....

আমিঃ এইতো আসল রূপে ফিরে আসতেছো। আমি থাকবোই না।

সাদিয়াঃ বের হলেই আমি আপনার আব্বু আম্মুকে ডাকবো। আর এমন ভাবে আপনাকে ফাসাবো না? বুঝতে পারবেন।

আমিঃ এর মধ্যে আবার আব্বু আম্মু কেনো? আমি এখানেই থাকছি তো।

সাদিয়াঃ এইতো লক্ষ্মী ছেলে। একপাশে চুপ করে ঘুমাবেন।

আমিঃ আচ্ছা....


আমি বিছানায় শুয়ে পরলাম। আমার বউ মাজখানে কোলবালিশ দিয়ে অন্য পাশে ঘুমাইলো।


আমি আবার মোবাইলে সেই সাউন্ড প্লে করলাম। সাদিয়া শুনেই তো এসে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।


এবারও মনে হয় আমার শরীলে ৩৫০ ভোল্টের কারেন্ট পাস করলো...


আমি কিছু না করে চুপ করেই শুয়ে আছি। মোবাইলে তখনও ভয়ংকর সাউন্ড হচ্ছিলো...


সাদিয়াঃ এইযে, এইদিকে ঘুরেন না, আমার কিন্তু খুব ভয় লাগছে...


আমি ঘুরে শুইলাম.... সাদিয়া একদম আমার বুকে মুখ লুকিয়ে আছে।


আমিঃ আবার কি হলো...

সাদিয়াঃ ওই আওয়াজ আবার হচ্ছে...

আমিঃ বুঝতে পেরেছি, কেনো এমন করে জ্বালাচ্ছে তোমায়...

সাদিয়াঃ কেনো...

আমিঃ না থাক, তোমার শুনে লাভ নেই। তুমি চোখ বন্ধ করে থাকো...

সাদিয়াঃ এভাবে আমি থাকতে পারবো না। বলেন, কেনো ওরা এমন করছে...

আমিঃ বলবো...

সাদিয়াঃ বলেন...

আমিঃ আসলে ওরা আমার সাথে মাঝে মাঝেই এসে কথা বলে...

সাদিয়াঃ কীহ? আপনার সাথে কথা বলে?

আমিঃ হুম, মাঝে মাঝে। তো একদিন ওরা আমাকে বলতেছে, আমাকে যে বিয়ে করবে, সে নাকি আমাকে খুব ভালোবাসবে।

সাদিয়াঃতারপর?

আমিঃ পরে,আমি বললাম, যদি সে আমাকে ভালো না বাসে? তাহলে?


ভূতঃ তাহলে আমরা ওকে জ্বালিয়েই মেরে ফেলবো। যেখানেই যাবে, আমরা সেখানেই জ্বালাবো। ওকে আমরা শান্তিতে থাকতে দিবনা। তাই হয়তো তোমাকে এভাবে জ্বালাচ্ছে।


সাদিয়াঃ কি বলছেন এইসব....


আমিঃ হ্যাঁ, যেটা সত্যি, সেইটাই তো বললাম। এখন তুমি তো আমাকে ভালোবাসবে না, তাই ওদের কথা অনুযায়ী তোমাকে হয়তো জ্বালাবে...


দেখলাম, সাদিয়া কিছু না বলে চুপ করেই শুয়ে আছে। আমি দুষ্টুমি করে বললাম...


আমিঃ না না, ওকে কিছু করো না। ও তোমাদের বুঝতে পারে নাই। আমি ওকে বুঝিয়ে বলে দিবো....


সাদিয়াঃ একি? আপনি কার সাথে কথা বলেন?

আমিঃ ঐযে , ভূতেরা বলতেছে, তোমাকে নাকি কাছে এসে জ্বালাবে... তোমার উপর নাকি ওরা ভর করবে...তাই না করলাম...

সাদিয়াঃ আ আ আপনি এইসব কি বলতেছেন? আমার খুব ভয় লাগছে...

আমিঃ আমি কি করতে পারি বলো...

সাদিয়াঃ আমি বলছিলাম কি...!!

আমিঃ কি? বলো...

সাদিয়াঃ ওদের কথা মতো হলে কি ওরা আমাকে ছেড়ে দিবে?

আমিঃ ওরা তো তাই বলতেছে। কিন্তু তুমি তো আমাকে ভালবাসতে পারবে না।

সাদিয়াঃ না, আমিতো বলিনি যে পারবো না। ওদের কে বলেন না, ওদের ইচ্ছে পূরণ হবে। তবুও যেনো আমাকে ছেড়ে দেয়...

আমিঃ সত্যি তো?

সাদিয়াঃ হুম, সত্যি....


আমিঃ .....ঠিক আছে, বলতেছি। এইযে ভূত ভাইয়েরা, শুনলেন তো আপনারা, এবার ওকে ছেড়ে দেন প্লিজ.... ( আমি চুপ করে ফোন টা অফ করে দিলাম) 


সাদিয়াঃ ওয়াও, আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেছে।

আমিঃ হুম, ওদের কথা মতো চললে তো কিছু করবেনা...

সাদিয়াঃ কিসের কথা? আমিতো ওদের সরাতে বলছি। এখন সরে গেছে। এখন শরুন।

আমিঃ ঠিক আছে, কিছু হলে আমার দোষ দিও না...


আমি আবার সেই সাউন্ড প্লে করে দিলাম।সাথে সাথেই সাদিয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে বলতেছে...


সাদিয়াঃ ভুল হয়ে গেছে, আর হবেনা। আর কখনো এমন বলবোনা। মাফ করে দেন, আমাকে ছেড়ে দেন। আমি আপনাদের কথা মতো চলবো...


আমি আবার আওয়াজ বন্ধ করে সাদিয়াকে জড়িয়ে ধরলাম এরপর যেই ওর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি....


সাদিয়াঃ কি করছেন কি?

আমিঃ থাক, বাদ দিলাম, ওরা আসুক আবার...

সাদিয়াঃ এই না না...


এটা বলে ও নিজেই আমার ঠোঁট ওর নিজের আয়ত্বে নিয়ে নিলো।আমিও হাড়িয়ে গেলাম ওর মাঝে। শুরু হলো, আমাদের নতুন জীবন।বাকিটা ইতিহাস...


(এই যে, এখন কি বাসর কিভাবে করলাম! সেটাও শুনবেন নাকি...লুচু পাঠক পাঠিকা...!!😁)


পরের দিন সকালে... 


আমি ঘুমাচ্ছি... তখনই সাদিয়া আসলো...


সাদিয়াঃ এই যে, শুনছেন? উঠুন তাড়াতাড়ি.....

আমিঃ কি ব্যাপার সোনা? রেগে আছো মনে হয়?

সাদিয়াঃ আমি আপনার বোনকে জিজ্ঞেস করছিলাম, ভূতের বিষয় নিয়ে। ও তো বললো এই বাড়িতে এমন কিছুই নেই। আপনি নাকি মজা করছেন...

আমিঃ আরে ওই তো জানেই না। আর তাছাড়াও আমি কিভাবে মজা করলাম? বলো...

সাদিয়াঃ হ্যাঁ, সেটাই তো। কিন্তু সুমাইয়া যে বললো...


আমিঃ ওর কথাই শুনো... সমস্যা নেই..আজকে রাতেই দেখো, আসলে ওরা আছে...নাকি নেই...

সাদিয়াঃ না না, তার কোনো দরকার নেই। আমি আপনাকে শুধু জিজ্ঞেস করছি। আর কিছু না। আর কখনো জিজ্ঞেস করবো না...


আমিঃ তাহলে একটু মিষ্টি মুখ করাও....


বলেই আমি ওকে টেনে বুকের মধ্যে নিয়ে নিলাম। এরপর আবার হারিয়ে গেলাম সুখের এক অন্য রাজ্যে...!!


•••••ভূত নাকি মানুষের শুধু অপকারই করে, কিন্তু এখানে তো ভূত আমার অনেক উপকার করে দিলো... হা হা হা...!!🥰


      _______________সমাপ্ত______________

গল্পের নামঃ ভূতময় বাসর রাত

লেখকঃ MR.SHADOW


→ সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন ❤️


আল্লাহ হাফেজ 💝


এমন আরও রোমান্টিক বাসর রাতের গল্প পড়ুন।