মেয়ে'কে জোর করে বিয়ে: তারা কি আজও? সুখী | ১০টি ছোট গল্প বাস্তব

 গল্প ১: শেষ দেখা

জোর করে বিয়ে

আফরোজা জানে, ভালোবাসা সবসময় নিজের হয় না। ভালোবাসতো হৃদয়কে, কিন্তু এক রাতে বাবার চোখে অশ্রু দেখে হৃদয়কে বিদায় জানায়। বাবা বলেছিলেন, “তোর সুখ চাই মা।”

বিয়ের ছয় বছর পরেও স্বামীর চোখে কোনো ভালোবাসা খুঁজে পায় না সে। প্রতিদিন রাতে মা’কে ফোন করে শুধু জিজ্ঞেস করে, “মা, সেই একদিন কবে আসবে?”

মা বলেন, “আল্লাহর উপর ভরসা রাখ, তোর জন্য ভালো কিছু রেখেছেন। তুই তো মেনে নিয়েছিস, এখন অপেক্ষা কর।” কিন্তু আফরোজার অপেক্ষা শেষ হয় না।

---

গল্প ২: বন্ধ দরজা

রাফসানার ভালোবাসা ছিলো আলিফ। আলিফ প্রতিদিন ঘুমানোর আগে ‘শুভরাত্রি’ বলত। এখন শুভরাত্রি বলে এক অচেনা পুরুষ, যাকে বিয়ে করেছে বাবা-মায়ের ইচ্ছায়। কিন্তু সেই শুভরাত্রি তার কানে গিয়ে থেমে যায়।

ভালোবাসাকে দাফন করেছিল মানসিকভাবে, চোখের জলে। এখন দিনের পর দিন নিজের ঘরেই সে বন্দী।

মা’র একটা কথা ঘুরে ফিরে আসে মনে: “মেনে নে মা, তোর সময় আসবে।” কিন্তু সেই সময়ের দরজা এখনো বন্ধ।

---

গল্প ৩: বারান্দার গল্প

তানভিরার বিয়ের পর তার শখের বারান্দাটা পেয়েছে, কিন্তু যাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল, সেই মানুষটা নয়। বাবা-মা তাকে বুঝিয়েছিল, “এই ছেলেই তোর ভবিষ্যৎ।”

ভবিষ্যৎ এসেছে, কিন্তু কোনো রঙ নেই সেখানে।

প্রতি সন্ধ্যায় বারান্দায় দাঁড়িয়ে একটা ফোন করে মাকে: “মা, সুখ কী রঙের হয়?” মা হাসে, চোখ মুছে বলে, “ধৈর্য ধর মা, তুই তো আমাদের মুখ রক্ষা করেছিস।”

---

গল্প ৪: আয়নার প্রতিচ্ছবি

রাহেলার আয়নায় এখন আর রাহেলা নেই, আছে এক অপরিচিত মুখ। যে মানুষকে ভালোবেসেছিল, সে দূরে চলে গেছে। মা-বাবার চোখের জল দেখে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিল। এখন নিজের চোখে পানি জমে।

“মা, সেই একদিনটা আসবে তো?” মা প্রতিদিন বলে, “আসবে মা, তোর কান্না আল্লাহ শুনবেন।”

---

গল্প ৫: চায়ের কাপ

মুনা একদিন হৃদয়ের হাতে চায়ের কাপ তুলে দিতে চাইতো। এখন সে একজন ব্যাংকারের স্ত্রী, যার সাথে তার কোনো গল্প মেলে না। চায়ের কাপ ঠিকই দেয়, কিন্তু হৃদয় দেয় না।

ভালোবাসা, ত্যাগ, অভিমান—সব মিশে আছে এক কাপ চায়ের তলানিতে। মা প্রতিদিন কথা বলে, বলে “তুই কষ্ট করেছিস আমাদের জন্য, আল্লাহ তোর কষ্ট বিফলে যেতে দেবেন না।”

---

গল্প ৬: চিঠির খামে জীবন

সোহানার ড্রয়ারে এখনো সেই চিঠিগুলো আছে। যাকে ভালোবাসতো, তার লেখা। কিন্তু বিয়ে করেছে বাবার অফিস কলিগের ছেলেকে। ভালোবাসা কাগজে রয়ে গেছে, বাস্তবে না।

চিঠিগুলো মাঝে মাঝে পড়ে কাঁদে। মাকে জিজ্ঞেস করে, “মা, আমি কি ভুল করলাম?” মা বলে, “তুই ভুল করিসনি, তুই ত্যাগ করেছিস। তোর ত্যাগের মূল্য একদিন পাবি।”

---

গল্প ৭: জন্মদিন

তামান্নার জন্মদিনে আগে ফুল আসতো হৃদয়ের হাত ধরে। এখন আসে স্বামীর কার্ডে লেখা শুভেচ্ছা।

ভালোবাসা আর দায়িত্বের পার্থক্য তামান্না বুঝে গেছে। প্রতি জন্মদিনে শুধু মাকে কল করে কাঁদে। মা বলে, “তুই আমাদের সম্মান রেখেছিস মা, আল্লাহ তোর মুখে হাসি ফিরাবেন।”

---

গল্প ৮: বৃষ্টি সন্ধ্যা

মেহরিন ভালোবাসতো বৃষ্টির দিনে কারও হাত ধরে হাটতে। এখন বৃষ্টিতে সে ভিজে একা, জানে—কেউ হাত ধরবে না।

বাবা-মায়ের ইচ্ছায় বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে, কিন্তু হৃদয়ের খালি বাসা এখনো পূর্ণ হয়নি।

মাকে বলে, “মা, আমি ভালো থাকার অভিনয় করি, কবে বাস্তব হবে?” মা শুধু বলে, “সবর কর মা, তুই সঠিক কাজ করেছিস।”

---

গল্প ৯: রাতের খাবার

তানজিলার প্রাক্তন তাকে রান্না করতে শেখায়নি, ভালোবেসে বলত, “খাবার ঠিক আছে, তুই পাশে থাকলেই হয়।”

এখন রান্না করে সে স্বামীর রুটিন মাফিক তালিকায়। ভালোবাসা এখন পাত্র-পাতিলে নেই, আছে দায়িত্বে।

মাকে বলে, “মা, তোর মুখের হাসির জন্য আমি কি চিরকাল হাসতে পারব না?” মা বলে, “আল্লাহর কাছে চাই, তুই আবার হাসবি, সত্যিকারে।”

---

গল্প ১০: শেষ প্রশ্ন

নাজমার বিয়ের এক বছর পরেও সে মাঝেমাঝে নিজের ডায়েরি খুলে সেই মানুষটার নাম লেখে, যাকে ভালোবেসেছিল। বাবা-মায়ের কথায় সে চুপ থেকেছিল, কারণ তাদের কান্না সহ্য হয়নি।

নিজে এখন চোখ ভেজায় প্রতিদিন, আর বাবা-মা বলে, “মেনে নে মা, একদিন তোর সুখ হবে।”

সে শুধু বলে, “মা, সেই একদিনটা কবে?”

বিয়ে