গল্প: ভালোবাসার মুখোশের নিচে
রাহাত, ২৭ বছরের এক তরুণ। দেখতে স্মার্ট, ক্যারিয়ার মোটামুটি সেট, ঢাকায় একটা নামকরা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। বুকে একটা স্বপ্ন—সত্যিকারের ভালোবাসা পাবে, একজন জীবনসঙ্গী পাবে যে তার চোখে চোখ রেখে বলবে,
> "তুমি থাকলেই আমি সম্পূর্ণ।"
একদিন ফেসবুকে পরিচয় হয় মায়ার সঙ্গে।
মায়া—নাম যেমন, মুখও ঠিক তেমন। প্রোফাইল ঘেঁটে রাহাত দেখে মেয়ে বেশ ধর্মভীরু, সাহিত্যপ্রেমী, ফ্যামিলি মাইন্ডেড। ইনবক্সে কথা শুরু হয়। মায়ার ভাষা খুব মিষ্টি, অল্পতেই লজ্জা পায়, ভদ্রভাবে কথা বলে, যেন পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্পাপ মেয়ে।
রাহাত ভেবে ফেলে,
> "এই মেয়েটাই হয়তো আমার কপালের রাজকন্যা।"
তিন মাস পর
তাদের সম্পর্ক গভীর হয়। প্রতিদিন ফোন, ইনবক্সে হাজারো প্রেমভরা কথা। মায়া বলে,
> "তুমি ছাড়া এক মুহূর্তও চিন্তা করতে পারি না, আল্লাহর কাছে দোয়া করি—তুমি যেন আমার কপালে থাকো।"
রাহাতের মনে প্রেম জমে যায় নদীর মতো।
মায়া ধীরে ধীরে শুরু করে কৌশল।
> “আম্মুর ডাক্তারের বিল দিতে হবে ভাইয়া, বাসায় টাকা নেই।”
“ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে, অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে না।”
“তুমি যদি থাকো, ছোট ছোট চাহিদাগুলো বুঝবে না?”
রাহাত কাঁধের সব জমানো টাকা দিয়ে দেয়, মনেই করে না, কারণ সে জানে—এই মেয়েটাই একদিন তার স্ত্রী হবে।
কিন্তু আসল গল্প তখনও শুরু হয়নি।
রাহাত একদিন অফিস থেকে একটু আগে বাসায় আসে। রাস্তায় হঠাৎ বন্ধুর গাড়িতে চড়ে। বন্ধু জিজ্ঞেস করে,
> “তোর প্রেমিকা না মায়া নামে? দেখ, ওকে দেখলাম কাল মিরপুরে এক ছেলের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে।”
রাহাত অবাক হয়।
বন্ধুর কথা বিশ্বাস করে না। রাহাত ভাবে,
> “ভুল হতেই পারে। এত মায়া-মমতাময়ী মেয়ে কখনো বিশ্বাসঘাতক হতে পারে না।”
কিন্তু এরপর শুরু হয় আসল নাটক। রাহাত একদিন ফেক আইডি করে ইনবক্সে মায়াকে মেসেজ দেয়।
মায়া তার ওই ফেক আইডি’র প্রোফাইল পিক দেখে বলে ওঠে—
> “ভাই, আপনি এত হ্যান্ডসাম, আপনি আমার টাইপ। আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই, আমি অবিবাহিত।”
রাহাত স্তব্ধ।
তারপরের দিন
সে খোঁজ নিতে থাকে। ধীরে ধীরে তার জানা হয়, মায়া একসাথে প্রেম করছে ৬ জন ছেলের সঙ্গে। কেউ গার্মেন্টসে চাকরি করে, কেউ বিদেশে, কেউ ভার্সিটির ছাত্র। প্রতিটা ছেলের সঙ্গে প্রেমের ধরন ভিন্ন। কারো সঙ্গে প্রেমিকা, কারো সঙ্গে 'নিকা করবেন ইনশাআল্লাহ', আবার কারো সঙ্গে শুধুই 'ভাইয়া ভাইয়া' বলে বলে টাকা নেয়।
একজন তো ইতোমধ্যে মায়ার নামে সাড়ে ৩ লাখ টাকা লোন নিয়ে আইফোন কিনে দিয়েছে।
আর মায়া?
সে বলে,
> “তোমরা ছেলেরা তো শুধু শরীর চাও। আমি একটু চালাক হলে দোষ কোথায়?”
রাহাতের মন গলে যায় না আর। বরং মন পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সে বুঝে যায়, এই সমাজে এখন "মায়া" নামের অনেক মেয়ে আছে। এরা ফিল্টার মাখা চেহারায়, কসমেটিকসের পেছনে লুকানো মুখোশ পরে, বিশ্বাসের নামে অভিনয় করে, আর ভালোবাসাকে বানিয়ে ফেলে একটা 'প্রজেক্ট'।
শেষ দৃশ্য
রাহাত এখন আর প্রেমে বিশ্বাস করে না।
সে ভাবে,
> “আজকাল মেয়েরা কাউকে ভালোবাসে না, শুধু হিসাব রাখে কে কত টাকা দেয়, কে কত সুবিধা দিতে পারে। প্রেম নয়, প্রেমের ছদ্মবেশে লেনদেন চলছে।”
---
শিক্ষা:
সব মেয়ে এমন নয়, কিন্তু কিছু "মায়া"র মতন মেয়েরা আজকের সমাজে সত্যিকারের ভালোবাসা নষ্ট করে দিচ্ছে।
তারা প্রেমের নামে টাকা নেয়, বিশ্বাস ভাঙে, ছেলেদের পাগল বানিয়ে একদিন অন্য কারো হাত ধরে।
এরা কাউকে ভালোবাসে না, বরং প্রতিটা ছেলেকে ‘ব্যবহার’ করে, আর শেষে বলে—
> “সবাই এক রকম, ছেলেরা তো এমনই।”
আসলে ভালোবাসা আজও বেঁচে আছে, কিন্তু এর কবর খুঁড়ছে এই ‘ভালোবাসার অভিনয়’ করা মানুষগুলো।
Disclaimer / Story Policy
This story is entirely fictional. Any resemblance to actual events, characters, places, or times is purely coincidental. The primary purpose of our stories is to entertain readers and present various social or emotional perspectives.
We do not intend to provoke anyone, incite violence, or cause defamation in any way. Every individual and culture is different, and we deeply respect that. Our stories are not meant to hurt anyone’s feelings or beliefs.
If any part of the story resembles your personal life, it is completely unintentional and coincidental. We do not hold responsibility for such similarities.
"এই গল্পটি ‘জীবন যুদ্ধ গল্প.কম’ ওয়েবসাইটের নিজস্ব প্রকাশনা। আমাদের অনুমতি ছাড়া এই গল্প বা এর কোনো অংশ অন্য কোথাও প্রকাশ, অনুলিপি বা ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে আগে যোগাযোগ করুন।" Jibonjuddhogolpo@gmail.com