খারাপ সময়ের শিক্ষা
১.
“যখন জীবন আমাকে কাঁদায়, তখন আকাশেও মেঘ জমে না।
যাদের চোখে একদিন আমি ছিলাম আশ্রয়,
তারা আজ আশ্রয় খোঁজে অন্য ছায়ায়।
সবাই বলে—‘সব ঠিক হয়ে যাবে’,
কিন্তু কেউ পাশে দাঁড়িয়ে বলে না—‘আমি আছি’।
এই একাকিত্বই আমার সবচেয়ে বিশ্বস্ত সঙ্গী।”
২.
“অন্ধকার শুধু রাতের নয়,
কখনো কখনো দিনের আলোতেও অন্ধকার নেমে আসে।
আমি ডেকেছি—প্রিয়জন, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়;
কেউ আসেনি।
সাড়া দিয়েছে শুধু নিজের নিঃশ্বাস।
আমি বুঝেছি—বিপদে মানুষ নয়, আত্মা পাশে থাকে।”
৩.
“চোখে জল নিয়ে যখন কারো দরজায় গেছি,
তারা পর্দা টেনে দিয়েছে।
বলেছে, 'ব্যস্ত আছি', 'সময় নেই', 'সমাধান নিজেই খুঁজো'।
আমি খুঁজতে খুঁজতে একদিন পথ হয়ে গেছি—
যে পথে কেবল নীরবতা হেঁটে যায়।”
৪.
“আমার জীবনের সবচেয়ে গভীর সন্ধ্যাটা ছিল
যখন সবাই কাছের মানুষ ছিল,
কিন্তু কেউই আমার কান্না শুনেনি।
তাদের শব্দ ছিল, উপস্থিতি ছিল না।
আমি শিখেছি—নিঃসঙ্গতা কখনো কখনো মুক্তি হয়ে ওঠে।”
৫.
“জীবন যখন হোঁচট খায়,
তখন 'আপনজন' শব্দটা যেন তামাশা হয়ে দাঁড়ায়।
যারা বলেছিল, ‘তোর পাশে থাকব’,
তারা হয় অচেনা হয়ে গেছে,
না হয় ব্যস্ত হয়েছে নিজের আয়নায়।
আমি তখন শুধু আয়নাটাকে ঘৃণা করেছি।”
৬.
“কষ্টের দিনে যারা ফোন ধরেনি,
তাদের খুশির দিনে আমিও চুপ থেকেছি।
আমি প্রতিশোধ নিইনি, আমি অভিমান রেখেছি।
এই অভিমানই আমাকে কবি বানিয়েছে।”
৭.
“যে ছায়াটিকে নিজের ভরসা ভেবেছিলাম,
সে এক ঝড়েই উড়ে গেল।
যারা বলে ‘সব সময়ের বন্ধু’,
তাদের সময়ও শুধু ভালো দিনেই কাজ করে।
বিপদে তারা স্মৃতি হয়ে যায়।”
৮.
“আমি চেয়েছিলাম কেউ পাশে থাকুক।
না অর্থের জন্য, না সুবিধার জন্য—
শুধু একটা কাঁধ, একটা বাক্য, 'তুই পারবি'।
কিন্তু সবাই ব্যস্ত ছিল নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে।
তাই আমি নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে শিখেছি।”
৯.
“মানুষ যখন ভাঙে, তখন পাশে কেউ থাকে না।
ভাঙা মানুষদের নিয়ে কেবল কবিতা লেখা হয়,
কিন্তু কবিতার লেখক যখন ভাঙে,
তখন কেউ কলম ছুঁয়ে না।”
১০.
“ভালোবাসা মানুষকে গড়ে,
কিন্তু সহানুভূতির অভাব মানুষকে মাটিতে ফেলে দেয়।
আমি ভেবেছিলাম আমার মানুষগুলো অন্তত হাত বাড়াবে—
কিন্তু তারা শুধু ‘দূর থেকে খোঁজ রাখছি’ বলে সরে দাঁড়ায়।
সেই দূরত্বটাই আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন পাঠ।”